ভোট আসলেই অস্ত্র নিয়ে মিছিল করে বিজেপি। অন্য সময় এদের টিভিতেও দেখা যায় না। ভোটের সময় বসন্তের কোকিলের মতো আসে। খরা, বন্যা, দুর্গাপুজো, জগন্নাথ যাত্রায় এদের দেখা মেলে না। বিজেপি কোনও ধর্ম মানে না। ওদের একটাই ধর্ম দাঙ্গাধর্ম। আমি হিন্দুধর্ম করি, ছটপুজোয় যাই, ছটপুজোয় সরকার দুটি দেয়। চার্চে যাই, ইদে মুসলিম ভাইদের সঙ্গে মিলিত হই। পুজোর সময় ক্লাবে যাই। ছেলেরা বলে, দিদি বক্তৃতা দিতে হবে না– একটু চণ্ডীপাঠ করুন। আর দিল্লি থেকে জগাই-মাধাইরা এসে বলছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুজো করতে দেয় না। দুর্গাময়ের হাতে যে অস্ত্রগুলি আছে অশুভ শক্তির নাশের জন্য তার নামই এরা জানে না। আজ কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ মাঠে এভাবেই বিজেপিকে বিধলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে প্রবল দাবদাহের মধ্যে কৃষ্ণনগরে সভার শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রচণ্ড গরম। আমাদের কথামতো তো আর ভোট ঠিক হয় না। এই অবস্থায় আপনাদের কষ্ট দিতে আমার খুব খারাপ লাগছে। বিজেপি যাতে সব জায়গায় সভা করতে পারে তার জন্য প্ল্যান করে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে। বিজেপির সুবিধার্থে সাত দফায় ভোট। তাদের বাংলার ওপর খুব রাগ। রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের রূপসী বাংলার কথা ভেবে আমরা পশ্চিমবঙ্গের নামকরণ ‘বাংলা’ করতে চাই। আজ দু’বছর হয়ে গেল, মোদি সরকার নাম বদলাতে অনুমোদন দিচ্ছে না।’
Advertisement
আরএসএস টাকার বস্তা নিয়ে ঘুরছে। ক্ষমতায় আসলে সংবিধান বদলে দেবে বিজেপি। আমরা বাংলায় এনআরসি করতে দেব না– তোপ দেগো মমতা বলেন, ‘ওরা গদ, তলোয়ার নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ভোট দাও ভোট দাও বলে। বাইক কিনে দিয়েছে বিজেপি। একেবারে ওন্ডার মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। পৃথিবীর কোথা থেকে এরা ‘ আমদানি হল? অসমে ২২ লক্ষ হিন্দুকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তালিকায় মায়ের নাম আছে ছেলের নাম নেই। স্বামীর নাম আছে, স্ত্রীর নাম নেই। মহুয়া মৈত্রেরা শিলচরে গিয়েছিল, ওদের ঢুকতে দেয়নি।’ এই ভোট বাংলার নয়, দিল্লির, উল্লেখ করে তৃণমূল নেত্রীর তোপ, ‘ধর্ম নিয়ে ভোটের ভালো দাঙ্গা বাধাতে চাইছে বিঞ্জপি। দেশের অন্য কোনও কাজ করেনি। চাওয়ালা থেকে চৌকিদার- এরকম নেতো আমরা চাই না। হাজার হাজার টাকা ছড়িয়ে বলে বেড়াচ্ছে, ভোট দাও, ভোট দাও।’
Advertisement
এবার লোকসভায় কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন মহুয়া মৈত্র। বিগত দশ বছর এই কেন্দ্রে তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন তাপস পাল। গত ২২ এপ্রিল এই গভর্নমেন্ট কলেজ মাঠেই মোদির সেনাপতি অমিত শাহের সভায় দাঁড়িয়ে নদিয়া উত্তরের বিজেপি সভাপতি মহাদেব সরকার অশ্লীল ভাষায় মহুয়াকে আক্রমণ করেন। এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশন মহাদেব সরকারকে শো-কজ করেছে। সেদিন মহাদেব বলেছিলেন, ‘উনি নাকি উচ্চশিক্ষিত, বিদেশে পড়াশুনা করেছেন। সেদিন তিনি ভারতীয় স্বামীকে ভুলে গিয়েছেন। ভারতীয় মেয়েদের অলঙ্কার স্বামী। রাত্রিবেলায় রঙিন জল খান যা ভারতীয় নারীরা অপছন্দ করে।’
আজ মমতা বলেন, ‘আমাদের ভাষা মিষ্টি। তার অনেক স্পন্দন আছে। আমরা সব ভাষাকে ভালবাসি। জগাই-মাধাইরা এসে মহুয়াকে আক্রমণ করেছে।’ এদিন কৃষানগরে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসুচি মানুষের সামনে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী ।
Advertisement



