গোয়ায় ক্ষমতা ধরে রাখল বিজেপি , নতুন মুখ্যমন্ত্রী হলেন প্রমোদ সাওয়ান্ত

গোয়ায় ক্ষমতা ধরে রাখল বিজেপি , নতুন মুখ্যমন্ত্রী হলেন প্রমোদ সাওয়ান্ত

Written by SNS March 19, 2019 10:33 am

প্রমোদ সাওয়ান্ত ( ছবি - ট্যূইটার)

গোয়ার নতুন মুখ্যমন্ত্রী হলেন বিধানসভার স্পিকার বিজেপির প্রমোদ সাওয়ান্ত। সোমবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিক্করের অন্ত্যেষ্টির জন্য একদিকে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ বিজেপির অন্যান্য নেতারা গোয়ায় ব্যস্ত ছিলেন, অপরদিকে গোপনে সেখানে শরিক দলদের মানভঞ্জনে উদ্যোগী হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গড়কড়ি সহ বিজেপির অন্যান্য নেতারা। কারণ এদিনও রাজ্যপাল মৃদুলা সিনহার কাছে সরকার গঠনের দাবি জানাচ্ছিল কংগ্রেস। গত এক সপ্তাহের মধ্যে দুবার কংগ্রেস রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে গোয়ায় সরকার গঠনের দাবি করেছে। কিন্তু সরকার টিকে গেল বিজেপিরই। যদিও নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকার গঠণ করতে শরিক দলগুলিকে ছাড়তে হয়েছে দু-দুটি উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ বিজেপিকে, যা উপকূলবর্তী এই ছোট রাজ্যে এক কথায় অভূতপূর্ব । তবে পারিক্করের মৃত্যুর ফলে জাতীয় শোকের মাঝে বিজেপি ফের প্রমাণ করল জোট শরিকদের ম্যানেজ করার কৌশল কংগ্রেসের চেয়ে অনেক ভালো বোঝে এই গেরুয়া দল। এর জন্য সমস্ত রকেমের ত্যাগ স্বীকারেও রাজি তারা। বিজেপির এই রাজনৈতিক কৌশলের ফলেই তাদের এত বিরূপ সমালোচনা করার পরও শিবসেনার সঙ্গে জোট সম্ভব হয়েছে বিজেপির এবং অসমে অগপকে আবার  এনডিএ জোটে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে মোদির দল।

সোমবার সারাদিনই গোয়ার বিজেপির দুই শরিক দল ‘মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি’ (এমজিপি) এবং ‘গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি’র (জিএফপি) মানভঞ্জনে সময় অতিবাহিত করেছে বিজেপি এবং শেষ পর্যন্ত তারা বিজেপির প্রমোদ সাওয়ন্তকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃত দিয়েছে, যদিও তার জন্য বিজেপিকে ১২জনের মন্ত্রিসভার এই ছোট রাজ্য গোয়ায় দুটি উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ মেনে নিতে হয়েছে।

গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর পদে বিজেপির প্রমোদ সাওয়ান্ত বসলেও শরিক দল এমজিপির প্রমোদ সাওয়ান্ত বসলেও শরিক দল এমজিপির সুধীন দাভালকর এবং জিএফপির বিজয় সারদেশাই হলেন দুজন উপমুখ্যমন্ত্রী। সোমবার কিন্ত এই দুই শরিক দলকে বোঝানোও খুব সহজ ছিল না, কারণ দুদলই চেয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর পদ। মনোহর পারিক্করের মৃত্যুর পরেই রবিবার সন্ধ্যায় গোয়ায় এসে পৌঁছেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করি। তিনি শরিক দলদের সঙ্গে ভোর সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত বৈঠক করলেও তাদের রাজি করাতে পারেননি। এর পরেই হস্তক্ষেপ করতে হয় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ কে । ৪০ সদস্য বিশিষ্ট গোয়া বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কের সংখ্যা বর্তমানে ১২। এমজিপি এবং জিএফপি সদস্যদের ধরলে (এর মধ্যে একজন নির্দল বিধায়ক রয়েছেন) বিজেপি জোটের আসন সংখ্যা দাঁড়ায় ২১। অর্থাৎ সরকার গঠনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে মাত্র একটি আসন বেশি। অপরদিকে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা হল ১৫। দুজন বিজেপির বিধায়কের মৃত্যুর পর ২টি আসন এবং কংগ্রেসের দুজন বিধায়কের ইস্তফা দেওয়ার পর এখন চারটি আসনই ফাঁকা। সুতরাং খুবই সূক্ষ্ম সংখ্যাধিক্যের জোরে গঠিত হচ্ছে গোয়ায় নতুন বিজেপি সরকার । ২০১৭ সালে গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচনের পর ত্রিশঙ্কু বিধানসভায় তদানীন্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিক্করকে মুখ্যমন্ত্রী পদে সমর্থন জানিয়েছিল বিজেপির এই দুই শরিক দল। কিন্তু পারিক্করের অবস্থা যখন সংকটজনক হয়ে পড়েছিল, তখন ক্ষমতার গন্ধ পেয়ে তিনদিন আগেই বিরোধী দলনেতা  কংগ্রেসের চন্দ্রকান্ত কাভলেকর চিঠি লিখে রাজ্যপালকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন কংগ্রেসকে সরকার গঠনের সুযোগ দিতে । কিন্তু বিজেপিও ততপরতা শুরু করে দিয়েছিল। ফলে জিতে গেল বিজেপি। আপাতত গোয়ায় বিজেপি সরকার সংকটমুক্ত। অনেক ঘাত প্রতিঘাতের পর বিজেপির হাতেই ক্ষমতা র‍য়ে গেল সমুদ্র উপকূলের এই রাজ্যের।