করোনা থেকে সেরে ওঠার পরেও চিনের রোগীদের পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তাদের বেশির ভাগেরই ফুসফুস চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিনের চিকিৎসকদের দাবি, যাঁরা এ পর্যন্ত সেরে উঠেছেন, তাদের ৯০ শতাংশেরই ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভাইরাসে।
করোনার মারণ থাবা থেকে বেঁচে ফিরতে পারলেও ফুসফুস কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি। এই ৯০ শতাংশের মধ্যে কয়েকজনের ফুসফুসের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, বাড়ি ফেরার পরও অক্সিজেন মেশিনের ওপর ভরসা করেই কাটাতে হচ্ছে।
Advertisement
গত বছরের ডিসেম্বরের চিনের এই উহান শহরেই প্রথম করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল। সংক্রমণও ধরা পড়েছিল প্রথম এই শহরেই। ক্রমে চিনের সীমানা পেরিয়ে তা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে উহানে আক্রান্তদের মধ্যে একশো শতাংশই করোনা মুক্ত। কিন্তু তাদের শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করার জন্য যাগাযোগ রেখে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
Advertisement
উহান বিশ্ববদ্যালয়ের ঝেংনান হাসপাতালের ডিরেক্টর পেং ঝিয়ং জানান, তার নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একশোজনের একটি দল সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীদের পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। গত এপ্রিল থেকে ওই রোগীরা চিকিৎসক দলের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। পৌয়ের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তারা মিনিটে ৪০০ মিটারের বেশি হাঁটতে পারছেন না। আগে যেখানে অনায়াসে ৬ মিনিটে ৫০০ মিটার অতিক্রম করে যেতেন।
এই ওয়াকিং টেস্টের পরেই তারা এই রিপোর্ট দিয়েছেন। জানা গিয়েছে সমীক্ষার জন্য যাঁদের বেছে নেওয়া হয়েছিল তাঁদের গড় বয়স ৫৯। চিনা বিশেষজ্ঞদেরই আরেকটি দল জানাচ্ছে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার তিন মাস পরেও অনেককে দেখা গিয়েছে অক্সিজেন মেশিনের ওপর ভরসা করতে। হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরেও তারা অক্সিজেন মেশিন ছাড়া থাকতে পারছেন না।
দ্বিতীয় সমীক্ষাটি চালিয়েছেন বেজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইনিজ মেডিসিনের ডংজিমেন হাসপাতালের চিকিৎসক লিয়াং টেংগসিয়াও। এই রোগীদের বয়স ৬৫-র ওপরে। চিনা গবেষকরা আরও লক্ষ্য করেছেন, ১০০ জন রোগীর ক্ষেত্রে ১০ শতাংশের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে সেরে যাওয়ার পর করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। গবেষকরা আরও খেয়াল করেছেন, ১০০ জনরোগীর ইমিউন সিস্টেম পুরোপুরি ঠিক হয়নি। উপরন্তু রোগীরা হতাশায়ও ভুগতে শুরু করেছেন।
Advertisement



