তাপমাত্রা ও আপেক্ষিক আদ্রতা সঙ্গে করোনা সংক্রমণের যোগ রয়েছে। তাপমাত্রা বাড়লে ভাইরাসের আয়ু কমে আসে। আবার তাপমাত্রা কমলে ভাইরাসের টিকে থাকার সময়ও বাড়ে। তাই বর্ষা ও শীতের সময় তাপমাত্রা একটু কমলে ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। গবেষণায় এমনটাই দাবি করেছেন ভুবনেশ্বরের আইআইটি ও এইমসের গবেষকরা।
বর্ষার সময় তাপমাত্রার পারদ কম থাকে। বিশেষ করে আকাশ যদি মেঘলা থাকে এবং সূর্যের তাপ কম থাকে তাহলে করোনা ভাইরারে ইনকিউবেশন পিরিয়ড অর্থাৎ টিকে থাকার সময় বেড়ে যায়। শীতের সময়ও তাই। শুষ্ক বাতাস এবং ঠাণ্ডায় এই ভাইরাস বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। এই সময় তাদের জিনর গঠনের বদলও দ্রুত হয়। তাই হিউম্যান ট্রান্সমিশন অর্থাৎ মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা বেড়ে যায়। ভুবনেশ্বর আইআইটি-র গবেষকদের দাবি এমনটাই।
Advertisement
আইআইটি-র ওসেন অ্যান্ড ক্লাইমেট বিভাগের অধ্যাপক ভি ভিনোজ বলেছেন, এপ্রিল থেকে জুন মাস অবধি ২৮টি রাজ্যের করোনা সংক্রমণের কার্ভ পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ভারতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণই হল তাপমাত্রা ও আপেক্ষিক আর্দ্রতা। দেখা গেছে গরমের সময় ভাইরাসের বাড়বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে কম হয়। এই সংক্রমণ ছড়ানোর হার কমে যায়। তবে যদি লকডাউনের বিধিনিষেধ মানা না হয় কিংবা পারস্পরিক শারীরিক দূরত্ব বিধি মেনে না চলা হয় তাহলে সংক্রমণ বন্ধ করা যাবে না।
Advertisement
অধ্যাপকের বক্তব্য, গবেষণায় দেখা গিয়েছে তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে সংক্রমণ ছড়ানোর হার ০.৯৯ শতাংশ কমে যাবে। ডাবলিং টাইম, অর্থাৎ এক শরীর থেকে অন্য শরীরে ছড়ানোর ক্ষমতাও ১.১৩ দিন বেড়ে যায়।
ভুবনেশ্বর এইমস-এর মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের গবেষক ডক্টর বিজয়িনী বহরা বলেছেন, অতীতে সার্স ও মার্স মহামারি সময়ও দেখা গিয়েছিল ভাইরাসের সঙ্গে আবহাওয়ার যোগ রয়েছে।
ভাইরাস বেশি তাপমাত্রায় বাঁচাতে পারে না। সূর্যের তাপ যদি কোনো পদার্থের সারফেসে বেশি পড়ে তাহলে সেখানে ভাইরাস বৃদ্ধি হতে পারে না। শীতের সময় তাপমাত্রা কম থাকে। বাতাস অপেক্ষাকৃত শুষ্ক থাকে, এই সময় ভাইরাল স্ট্রেন খুব দ্রুত বিভাজিত হতে পারে। করোনা ভাইরাস বাতাসবাহিত কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুরুত জানিয়েছিল করোনা ভাইরাস বাতাসবাহিত নয়। পরে তারা সেই মত বদল করে জানায় বাতাসে ভেসে থাকতে পারে সার্স কভ ২। মানুষের থুতু লালার মাধ্যমে নির্গত ছোট ছোট জলকনায় বাহিত হয়ে অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে এই ভাইরাস। এই দূরত্ব নিয়েও নানা মত রয়েছে। শুরুতে জানা গিয়েছিল বাতাসবাহিত জলকনা বা ড্রপলেটে ভেসে ভাইরাস ৬ ফুট পর্যন্ত যেতে পারে। পরে মার্কিন গবেষকরা বলেছেন, এই দূরত্ব ৬ ফুট নয়, তারও বেশি।
Advertisement



