করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সব দেশেই নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে দুই সপ্তাহ ধরে এটি কমছে। এর ফলে দেশে শনাক্ত মানুষের সংখ্যা কমলেও হার বাড়ছে। পরিসংখ্যান বলছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ১৩ ও পাকিস্তানে ১২ শতাংশের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর বাংলাদেশে এটি ২৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ৪২৩ জনের করোনা নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই সময়ে ৩ হাজার ৯৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘন্টায় করোনায় মারা গেছেন ৩৯ জন। দেশে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়। দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ২ হাজার ৩৯১ জন। মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৮৯৪ জনের। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে ৪ হাজার ৭০৩ জন।
Advertisement
রবিবার দেশে করোনায় সংক্রমিত ২ হাজার ৬৬৬ জন শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। মারা গিয়েছিলেন ৪৭ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল ২ জুলাই। ওই দিন শনাক্তের হার ছিল প্রায় ২২ শতাংশ। এরপর থেকে শনাক্ত কমলেও শনাক্তের হার বাড়ছে। সর্বোচ্চ শনাক্তের দিন পরীক্ষা হয়েছিল ১৮ হাজার ৩৬২টি নমুনা। এরপর নমুনা পরীক্ষা আর ১৬ হাজার পার হয়নি।
Advertisement
গত ১০ দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৪৮৯ জন। ভারতের গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় ভারত ২ লক্ষ ১০ হাজার ১০৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৮ হাজার ৭০১ জনের করোনা শনাক্ত করেছে। আর পাকিস্তানের করোনা বিষয়ক সরকারি ওয়েবসাইট বলছে, ২২ হাজার ৫৩২টি নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৭৬৯ জনকে শনাক্ত করেছে।
তবে স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৪৩২টি। এতে ৩ হাজার ৯৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। দেশে সর্বোচ্চ নমুনা প্রীক্ষা হয় ২৬ জুন, ১৮ হাজার ৪৯৮টি। এরপর থেকে দিনে দিনে কমেছে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমে আসছে। এটি এখন কমতে থাকবে। কোরবানির পশুর হাট নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে সংক্রমণ আর বাড়ার তেমন ঝুঁকি নেই।
দেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। ওই দিন করোনা শনাক্তের হার ছিল ৪৩ শতাংশ। ৭ জনের পরীক্ষা করে ৩ জনের শনাক্ত করা হয়। এরপর ধীরে ধীরে নমুনা পরীক্ষা বাড়তে থাকে। এরপর ২০ মে পর্যন্ত করোনা শনাক্তের হার ১৯ শতাংশের মধ্যেই ছিল। আর এখন এটি ২৫ শতাংশ। প্রথম দিনের পর এটি দেশে সর্বোচ্চ।
সামগ্রিকভাবে গতকাল পর্যন্ত ভারতে নমুনা। পরীক্ষার বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ৭ শতাংশ। পাকিস্তানে এটি প্রায় ১৬ শতাংশ। আর বাংলাদেশে এ হার প্রায় ২০ শতাংশ। প্রতি ১০ লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে নমুনা পরীক্ষার দিক থেকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৬ তম।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা বাড়াতে পরীক্ষাগার বাড়ানো হচ্ছে। পরীক্ষাগার বাড়লেও প্রীক্ষার সংখ্যা কমছে। দেশে এখন ৭৭টি পরীক্ষাগাল্পে মধ্যে প্রতিদিনই কিছু না কিছু বন্ধ থাকে। শুক্রবার ৯টি ও শনিবার ৫টিতে কোনও পরীক্ষা হয়নি। তবে দেশে সর্বোচ্চ নমুনা পরীক্ষার সময় পরীক্ষাগার ছিল ৬৬টি। ওইদিন দুটি প্রীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
Advertisement



