মীনাক্ষী ভট্টাচার্য
দিল্লি, ৩০ ডিসেম্বর– বাংলায় বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি যখন তুঙ্গে, ঠিক সেই সময় দিল্লিতে হয়ে গেল একটি রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বৈঠক। মঙ্গলবার সকালে দেশের রাজধানীর ৭ নম্বর লোককল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে যান কংগ্রেস নেতা ও লোকসভার প্রাক্তন কংগ্রেস দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। কলকাতায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কর্মসূচির মধ্যেই এই বৈঠক হওয়ায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়। অনেকেই এই সাক্ষাৎকে আসন্ন বিধানসভা ভোটের সঙ্গে মিলিয়ে নানা হিসাব কষতে থাকেন।
Advertisement
তবে বৈঠক ঘিরে যাবতীয় রাজনৈতিক জল্পনায় নিজেই ইতি টানেন অধীর চৌধুরী। তিনি স্পষ্ট জানান, এই সাক্ষাতের মূল উদ্দেশ্য ছিল পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের দুরবস্থা প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি জানানো। অধীরের দাবি, বিজেপি-শাসিত একাধিক রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে নিগৃহীত হচ্ছেন। তাঁর বক্তব্য, এই বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই উপেক্ষিত থেকেছে এবং এ নিয়ে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ জরুরি।
Advertisement
বৈঠকে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বোঝান যে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক পশ্চিমবঙ্গ থেকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করেন এবং তাঁদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। অধীরের অভিযোগ, প্রশাসনিক স্তরে তাঁদের প্রায়ই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ভুল চিহ্নিত করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
অধীর চৌধুরী আরও জানান, তিনি হার-জিতের রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এই ইস্যুতে লড়াই চালিয়ে যেতে চান। তাঁর কথায়, পরিযায়ী শ্রমিক যেখানে নির্যাতিত হচ্ছেন, সেখানেই তিনি যাবেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই বিষয়ে কী করবে, তা নিয়ে তিনি চিন্তিত নন বলেও জানান। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এটি তাঁর কাছে কোনও নির্বাচনী ইস্যু নয়, বরং মানবিক দায়বদ্ধতা।
বৈঠকে মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটাধিকার নিয়েও কথা বলেছেন অধীর। তাঁর অভিযোগ, এসআইআর প্রক্রিয়ার পর মতুয়া সম্প্রদায়ের বহু মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তিনি জানান, এই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। অধীরের দাবি, প্রধানমন্ত্রী সব তথ্য জানতেন না, তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি মতুয়া সম্প্রদায় ও পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধও করেছেন তিনি।
Advertisement



