প্রবাদ আছে, সকালের খাবার খাওয়া উচিত রাজার মতো। শরীর সুস্থ রাখতে প্রাতরাশ বা ব্রেকফাস্টের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু আধুনিক জীবনযাত্রার ব্যস্ততায় গত কয়েক বছরে বহু মানুষই ইচ্ছাকৃতভাবে সকালের জলখাবার বাদ দিচ্ছেন। এই অভ্যাস যে শুধু শরীরকে দুর্বল করে তা নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।
‘নিউট্রিশনাল নিউরোসায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা নিয়মিত ব্রেকফাস্ট এড়িয়ে যান, তাঁদের মধ্যে অবসাদ, মানসিক চাপ এবং স্নায়বিক সমস্যার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এই গবেষণাটি একটি বিস্তৃত সিস্টেমেটিক রিভিউ ও মেটা-অ্যানালিসিস, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৩টি পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে প্রায় ৩ লক্ষ ৯৯ হাজার মানুষের তথ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল।
Advertisement
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত জলখাবার না খাওয়া মানুষের মধ্যে ডিপ্রেশনের ঝুঁকি প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে মানসিক চাপের আশঙ্কা বেড়ে যায় ২৩ শতাংশ। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীদের ক্ষেত্রে উদ্বেগ বা অ্যাংজাইটির ঝুঁকি ৫১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। গবেষকদের মতে, প্রাতরাশ বাদ দিলে শরীর পর্যাপ্ত শক্তি পায় না, যার ফলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং মানসিক ক্লান্তি বাড়ে।
Advertisement
বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সকালের খাবার মস্তিষ্কে প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ সরবরাহ করে, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ও মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে এই গ্লুকোজের ঘাটতি তৈরি হয়, যা মানসিক চাপ ও উদ্বেগের জন্ম দেয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, ঘুম থেকে ওঠার দুই ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই জলখাবার খাওয়া উচিত। সকালের খাবারে প্রোটিনসমৃদ্ধ ও পুষ্টিকর খাবার রাখুন। খালি পেটে চা-কফি এড়িয়ে চলাই ভালো। ফল, স্যালাড, ওটস বা ডালিয়ার মতো খাবার মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
Advertisement



