মুকুল রায়ের বিধায়কপদ খারিজ সংক্রান্ত কলকাতা হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আর উচ্চ আদালতে আবেদন করবে না পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে ঠিক ছিল, কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে বিচানসভার সচিবালয়। কিন্তু আইনি পরামর্শনের পর এই সিদ্ধান্তে বদল আসে।
এ বিষয়ে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মুকুল রায়ের বিধায়কপদ খারিজ সংক্রান্ত মামলার পার্টি ছিলেন তাঁর পুত্র শুভ্রাংশু রায়। তাই হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করার বিষয়ে তাঁদের পক্ষ থেকে উদ্যোগী হতে হবে। বিধানসভা আর এ ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ করবে না। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, আদালতের রায়ের পর বিষয়টি নিয়ে আইনি পরামর্শ নিয়েছিলেন স্পিকার।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে তাঁর। প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারপর সিদ্ধান্ত হয়, বিধানসভার সচিবালয় এই সংক্রান্ত বিষয়ে আর উচ্চ আদালতে আবেদন করবে না। মুকুল রায়ের ছেলে এই মামলার সঙ্গে যুক্ত থাকায় তিনিই বাবার বিধায়কপদ খারিজ সংক্রান্ত মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন মুকুল। ওই বছরেরই ১১ জুন তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন। এর পরই তাঁর বিধায়কপদ খারিজের দাবি তোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও মুকুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান। কিন্তু স্পিকার কোনও ব্যবস্থা নেননি। এরপর সুপ্রিম কোর্টে এই নিয়ে মামলা করেন শুভেন্দু।
শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, এই মামলার নিষ্পত্তি কলকাতা হাইকোর্টেই করতে হবে। এরপর শুভেন্দু হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এছাড়াও মুকুল পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান পদে কেন থাকবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পৃথক মামলা করেছিলেন বিজেপির কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায়। ১৩ নভেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শব্বর রশিদির বেঞ্চ মুকুলের বিধায়কপদ খারিজ করে দেয়। বলা হয়, দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁর বিধায়কপদ খারিজ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মুকুল রায়। তাঁর শারীরিক অবস্থা গুরুতর। তিনি হাসপাতালে অচৈতন্য অবস্থায় রয়েছেন। তাই বিধায়কপদ নিয়ে তাঁর আর কোনও উৎসাহ নেই বলেই জানিয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা। এক্ষেত্রে মুকুলের বিধায়কপদ খারিজ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় তাঁর ছেলে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যাবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
Advertisement