রাপ্পা রায় নাকি একটি জনপ্রিয় কমিক বুক চরিত্র। হবেও বা। দুর্ভাগ্যক্রমে এই কমিক গোয়েন্দার সঙ্গে পরিচয় ঘটালেন পরিচালক ধীমান বর্মণ। বাংলা সিনেমায় যখন থ্রিলার কাহিনী আর গোয়েন্দার অগণিত ভিড়, তখন এই নতুন সংযোজন রাপ্পা রায়কে নিয়ে কিঞ্চিৎ আগ্রহ ছিল। তাও আবার কমেডি ঘরানার থ্রিলার! এই ‘বাংলা’ বাজারে সত্যিই সাহস দেখিয়েছেন বটে ধীমান। চার বন্ধু (অরিত্র, অনিত, অয়ন) মিলে কো-অপারেটিভ কায়দায় চিত্রনাট্য লিখে শেষ পর্যন্ত থ্রিলার ঘরানায় একটি বাটি চচ্চড়িই বানিয়েছেন!
স্বাদ নয়, নুন কম মিষ্টি বেশি। মিষ্টির কাজটি করেছেন ফিল্মি নায়িকা ডলফিন (নামটাও কমিক!) গাঙ্গুলি (অলিভিয়া)। ‘জয়ধ্বজ’ পত্রিকার ইলাস্ট্রেটর/কার্টুনিস্ট রাপ্পা রায় (অর্পণ)। সম্পাদিকা চান্দ্রেয়ী ঘোষ সারাক্ষণ সিগারেট টানতে টানতে পত্রিকা সম্পাদনার কাজ করেন! এটাও বেশ কমিক্যাল টাচ। কিন্তু এই রাপ্পা রায় সম্পাদিকার কাছ থেকে বার বার বকুনি খেয়েও কীভাবে যেন ‘ফুল স্টপ ডট কম’ নামের এক ব্লগের কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। এবং একটা সময় ছবি আঁকা ছাড়াও ওই ব্লগারদের কুকর্মগুলো ফাঁস করতে শুরু করে রাপ্পা। আর তারাই প্রতিশোধ নিয়ে রাপ্পার বন্ধু উঠতি অভিনেত্রী ডলফিনকে টার্গেট করলে রাপ্পাও জড়িয়ে পড়ে পাল্টা চাপ দিতে। তখন তাঁর সঙ্গী হয় বন্ধু ফিল্ম পরিচালক টনি (দেবাশিস), যাঁর ছবি করার স্বপ্ন অপূর্ণই থাকে শেষ অব্দি।
Advertisement
এমনসব চরিত্র ছাড়াও টিক-টক (প্রান্তিক-সৌরভ) নামের এক ভিলেন মার্কা জুটি আছে, যাঁদের কাজ ব্লগারদের সাহায্য করা। আছে রাপ্পার বয়স্ক বাবা (শান্তিলাল), রেস্তরাঁ মালিক (রজতাভ), মন্ত্রী অরিন্দম (নীল), যিনি ডলফিনের ‘সঙ্গ’ চান, খুচরো রাজনৈতিক কর্মী (রাহুল অরুণোদয়)। এত চরিত্রের ভিড়ে আর নানান শাখা-প্রশাকা ছড়ানো গল্পের চাপে চিত্রনাট্য বেসামাল! সম্ভাবনা ছিল না যে তেমন নয়! কিন্তু যা হবার তাই-ই হয়েছে। পুরো ছবিটিই যাকে বলে ঘেঁটে ঘ! অভিনয় সক্কলেই কমেডির মেজাজটি বজায় রেখেছেন ঠিকই, কিন্তু থ্রিলার কাণ্ডটি যে একেবারেই জমেনি! কন্টিনিউটির কোনও বালাই নেই! আসলে ছবি তৈরির ব্যাকরণ না জেনে আসরে নামলে যা হয় কি! রাপ্পা রায় নিদেন পক্ষে একটি লারেলাপ্পা মার্কা ছবিও করতে পারলেন না, এটাই আফশোস! —নি.ধ.
Advertisement
Advertisement



