গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে প্যাটিস বিক্রেতাদের মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হল তিনজনকে। বৃহস্পতিবার ময়দান থানার পুলিশ ধৃত সৌমিক হালদার, স্বর্ণেন্দু চক্রবর্তী ও তরুণ ভট্টাচার্যকে গ্রেপ্তার করেছে। গত ৭ ডিসেম্বর, রবিবার ব্রিগেডে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে চিকেন প্যাটিস বিক্রি করছিলেন ২ জন। গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে প্যাটিস বিক্রির জন্য দুজন বিক্রেতাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এমনকি বিক্রেতাদের ওঠবোস করানোও হয়েছে। গত রবিবার ব্রিগেডের নানা ভিডিও ও ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। আর তা থেকেই পুলিশ ধৃতদের চিহ্নিত করেছে। এই প্রসঙ্গে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কৃষ্ণনগরের জনসভার মঞ্চ থেকে তাঁর স্পষ্ট বার্তা,’এটা বাংলা। উত্তরপ্রদেশ নয়।’ অভিযুক্ত সকলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
রবিবার আরএসএস-ঘনিষ্ঠ সনাতন সংস্কৃতি সংসদ ব্রিগেডে বিশাল গীতাপাঠের আয়োজন করেছিল। সেখানে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সহ পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি শীর্ষ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এই কর্মসূচি চলাকালীন দুই প্যাটিস বিক্রেতার উপর হেনস্থা করা হয়। এরপর মঙ্গলবার মহম্মদ সালাউদ্দিন এবং শেখ রিয়াজুল নামে ওই দুই প্যাটিস বিক্রেতা ময়দান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে জোড়া এফআইআর রুজু করে পুলিশ। এফআইআর দায়েরের দুদিন পর ঘটনায় ধৃত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌমিকের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙায়, স্বর্ণেন্দু থাকেন অশোকনগরে ও তরুণ হুগলির উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
Advertisement
হুগলির আরামবাগের বাসিন্দা প্যাটিস বিক্রেতা শেখ রিয়াজুলের অভিযোগ, রবিবার দুপুর ১টা নাগাদ ব্রিগেডে তিনি প্যাটিস বিক্রি করছিলেন। আচমকা কয়েকজন এসে তাঁকে চড়,কিল, ঘুষি মারতে থাকেন। এমনকি তাঁর ৩০০০ টাকার মজুত করা খাবারও নষ্ট করে দেয়। ধর্মীয় ভাবাবেগেও আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আরও এক প্যাটিস বিক্রেতা মহম্মদ সালাউদ্দিন, তিনি কলকাতার তপসিয়ার বাসিন্দা। তাঁকেও প্যাটিস বিক্রি করার জন্য মারধর করা হয়। ওঠবোস করানো হয়। তাঁরও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
Advertisement
এই ঘটনায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৮৯ (২), ১২৬ (২), ১১৫ (২), ২৯৯, ৩৫১ (৩), ৩২৩ (২) ধারায় মামলা রুজু হয়। এরপরেই পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে। ঘটনার প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার দুপুরে কৃষ্ণনগরের জনসভার মঞ্চ থেকে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘সবকটাকে গ্রেপ্তার করেছি। এটা বাংলা। উত্তরপ্রদেশ নয়।’ সর্বধর্ম সমম্বয়ের বার্তা দিয়ে মমতা আরও বলেন, ‘গীতাপাঠ তো আমরা সকলেই বাড়িতে করি। পাবলিক মিটিং করার কী দরকার? দুর্গাপুজো যখন হয়, তখন মিলেমিশে করি। আপনারা কে? যে ভেদাভেদ করছেন। আমি সবধর্মকে নিয়ে চলতে চাই। নতুন ধর্ম আমদানি করেছেন।’
Advertisement



