রাজ্যসভার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ও আরটিআই কর্মী সাকেত গোখলে দেশের বিচারব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন। তিনি সংসদে একটি প্রাইভেট মেম্বারস বিল পেশ করেছেন, যার পোশাকি নাম ‘রেকর্ডস অব কোর্ট প্রসিডিংস বিল, ২০২৫’। এই বিলে বলা হয়েছে—জেলা আদালত থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত, প্রতিটি আদালতের কার্যক্রম লিখিতভাবে নথিবদ্ধ করা হোক এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক।
সংসদের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি শুক্রবার দুপুরের পরে সাংসদেরা নিজেদের প্রস্তাব বা প্রাইভেট মেম্বারস বিল পেশ করেন। সেই সুযোগে সাকেত গোখলে জানান, সংসদের প্রতিটি আলোচনা যেমন নথিবদ্ধ হয়, আদালতের ক্ষেত্রেও তা হওয়া উচিত। কারণ বর্তমানে আদালতের ক্ষেত্রে শুধু রায় বা লিখিত নির্দেশ প্রকাশ্যে আসে। শুনানির সময় কী প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়েছে, কোন যুক্তি দেওয়া হয়েছে, বিচারক কী মন্তব্য করেছেন—এসব কিছুই কোথাও অফিসিয়ালি রেকর্ড থাকে না। তাঁর মতে, বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা বাড়াতে এই তথ্যগুলি জনগণের জানার অধিকার থাকা উচিত।
Advertisement
একাধিক সাংসদও এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তাঁদের দাবি, অনেক সময় বিচারক শুনানিতে কঠিন বা গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন, যা পরে রায় বা লিখিত নির্দেশে থাকে না। আবার কখনও মৌখিক পর্যবেক্ষণে যা বলা হয়, রায়ে তার উল্টো সিদ্ধান্ত দেখা যায়। ফলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
Advertisement
উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে কলকাতা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এবং বর্তমান বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কিছু পর্যবেক্ষণ। শুনানির সময়ে তাঁর কিছু মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছিল, কিন্তু পরে লিখিত রায়ে সেই মন্তব্য না থাকায় রাজনৈতিক ভাবে সমালোচিত হন। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আগে বিচারপতিরা কথা কম বলতেন, রায়ে বেশি লিখতেন। এখন অনেকেই প্রচার পাওয়ার জন্য উল্টো করছেন।’ বিলটি সংসদে আলোচনায় আসবে কিনা, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
Advertisement



