বিশ্ব এইডস দিবস ২০২৫ পালিত হয়েছে রবিবার। দিবস পালন শুধু নয়, এই দিনটি পালনের সার্থকতা প্রতিফলিত হল রোগের সংক্রমণ হ্রাসের পরিসংখ্যানেও। ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ভারতে বছরে নতুন করে এইচআইভি সংক্রমণ ৪৮.৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি এইডস-এর কারণে মৃত্যুর ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে মায়ের ক্ষেত্রে ৮১.৪ শতাংশ এবং শিশুর ক্ষেত্রে ৭৪.৬ শতাংশ।
জাতীয় এইডস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী বর্তমানে ভারতে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে চলেছে। ২০২০-২১ -এ এইআইভি পরীক্ষা করা হয় ৪.১৩ কোটির। ২০২৪-২৫-এ এই পরীক্ষার হার বেড়ে হয়েছে ৬.৬২ কোটি।
Advertisement
অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি তথা এআরটি-ও বেড়েছে ব্যাপকভাবে। এই সময়ে চিকিৎসাধীন মানুষের সংখ্যা ১৪.৪৯ লক্ষ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮.৬০ লক্ষ হয়েছে। এই একই সময়ে ভাইরাল লোড পরীক্ষা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৮.৯০ লক্ষ থেকে হয়েছে ১৫.৯৮ লক্ষ। এই তথ্য দিয়েছে কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এর ফলে গত ১৪ বছরে আক্রান্তের হার আগের চেয়ে ৪৯ শতাংশ কমেছে।
Advertisement
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, এই ফলাফল বিশ্বব্যাপী রোগের চিকিৎসায় খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জগৎ প্রকাশ নাড্ডা সোমবার বিজ্ঞান ভবনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জাতীয় পর্যায়ে ‘বিশ্ব এইডস দিবস’ উদযাপনে অংশ নেন। এইচআইভি প্রতিরোধ, চিকিৎসা, যত্ন এবং কলঙ্কের ভয় দূর করে এই রোগ নির্মূল প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান। জাতীয় এইডস নিয়ন্ত্রণ সংস্থা তথা এনএসিও কর্তৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন যুব সমাজের প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্মীরা।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন-এর দাবি, প্রাথমিক পর্যায়ে যদি রোগ ধরা পড়ে তবে তা নিয়্ন্ত্রণ করা সম্ভব। এছাড়াও ভাইরাল লোড পরীক্ষা নিশ্চিত করে যে সঠিক পথে চিকিৎসা চলছে। এই সামগ্রিক প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিশেষ উদ্যোগ রয়েছে। ফলে এইডস-এর মতো মারণ রোগ নিয়্ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এইচআইভি এমন এক ভাইরাস যা মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে সরাসরি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ধ্বংস করে দেয় করে। সামান্য কোন রোগও রোগীর শরীরে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যেতে থাকে। দীর্ঘ দিন ধরে এইডস-এর প্রতিষেধক খুঁজতে গবেষণা চালিয়ে আসছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও তাতে এখনও আশার আলো দেখা যায়নি।
তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, এক্ষেত্রে রোগের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার মূল স্তম্ভ তিনটি। এক, যুবসমাজের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা, দুই, বৈষম্য এবং কলঙ্কের ভয় দূর করা এবং তিন, সংক্রমণ দূর করা। তবেই এই রোগের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হতে পারে। যৌন সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন কর্মসূচী নেওয়ার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।
Advertisement



