• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

বানান শিখতে শ্রুতিলিখন

বাংলা বানান ঠিকঠাক লেখার কাজটা একটু হয়তো জটিল লাগতে পারে, কেননা আমাদের র বর্ণ তিনটে। টোপর মাথায় বর লিখতে র, আবার বড় লিখতে ড়।

সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, শিক্ষক

বর্ণ পরিচয় হাতে নিয়ে কচিকাঁচাদের বাঙলা বর্ণমালার সঙ্গে পরিচয় ঘটাচ্ছেন মিতিন মাসি। অবসর নিয়ে এখন পাড়ার গুটিকয় ছেলে মেয়ের শিক্ষার গোড়া বাঁধছেন। মিতিন মাসি জানেন অক্ষর পরিচয় না হলে এক কদম‌ও এগনো যাবে না। মিতিন মাসির সুরে সুর মিলিয়ে ওরা বলতে থাকে অ অজগর আসছে তেড়ে, আ আমটি আমি খাবো পে…। এককালে স্কুলে পড়ানো নিতিন মাসি স্বরবর্ণ ছেড়ে ব্যঞ্জনবর্ণ ধরবেন। একটা একটা করে ইট গেঁথে যেমন তৈরি হয় বাড়ি সেভাবেই একটা একটা করে অক্ষর জুড়ে জুড়েই তৈরি করা হবে শব্দ।

Advertisement

তাদের পাশাপাশি বসালে মিলবে বাক্য। তবে তার আগে গয়নাগাটি যোগ করতে হবে অক্ষরের সঙ্গে, যেমন ক এর সঙ্গে আ কার জুড়লে পাব কা, ই কার জুড়ে কি, উ কার জুড়ে কু…। এভাবে মিলিয়ে মিলিয়ে মাত্রা যোগ করে দেখতে হবে কার সাথে কার মিল বেশি। প্রতিটা অক্ষর নিয়েই চলবে এই বর্ণ মিলান্তির খেলা। বোর্ডের ওপর চক দিয়ে আঁকা হলো আমের ছবি। এটা কি প্রশ্ন করতেই জবাব এলো ফল। এবার দেখা যাক ফল থেকে ফুল হয় কিনা! কেউ তৎক্ষণাৎ উত্তর দিল ফ এর সঙ্গে উ কার জুড়ে দিলেই হলো ফুল। আর কিছু? চলল খাতায় আঁক কেটে নতুন শব্দ তৈরির খেলা। দু চারটে বেয়াদব শব্দ‌ও হয়তো উঠে আসবে, তাকে নিয়ে হাসাহাসি হবে ক্লাসে, তবে তাতে দমলে চলবে না। পরীক্ষা নিরীক্ষা জারি রাখতে হবে। প্রথম অক্ষর ছেড়ে দ্বিতীয় অক্ষরটিতে মাত্রা যোগ করার কাজ শুরু হলেই দেখা যাবে পড়ুয়ারাই তৈরি করে ফেলছে নতুন নতুন শব্দ, নিতান্তই খেলার ছলে। এগুলো কিন্তু ওদের মনে একেবারে গেঁথে যাবে চিরকালের মতো।

Advertisement

বাংলা বানান ঠিকঠাক লেখার কাজটা একটু হয়তো জটিল লাগতে পারে, কেননা আমাদের র বর্ণ তিনটে। টোপর মাথায় বর লিখতে র, আবার বড় লিখতে ড়। এক‌ই রকম ভাবে বাণ লিখতে ণ ,আর বন লিখতে ন। পড়ার সময় যদি এদিকে খুব খেয়াল করে পড়া যায় তাও হলেই কিস্তিমাত। পড়ার কাজটা চালাতে হবে, সঙ্গে নিয়মিত লেখা। আমাদের ছোট বেলায় শ্রুতিলিখনের আলাদা ক্লাস ছিল। সেই ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনলে কেমন হয়?

Advertisement