উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে ফের একবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ১০০ দিনের কাজ চালু হয়নি। আবাস যোজনার টাকাও দেয় না কেন্দ্র। ২০২১ সালের পর থেকে বাংলায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গকে ভাতে মারার চেষ্টা চলছে। এছাড়াও জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মমতা। জিএসটি নিয়ে তিনি বলেন, এভাবে রাজ্যের হকের টাকা কেড়ে নেওয়া যাবে না। জিএসটির টাকা রাজ্যকে ফেরত দিতে হবে।
দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। এদিন বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে মুখ্যমন্ত্রী চলে যান উত্তরবঙ্গের সচিবালয় উত্তরকন্যায়। সেখান থেকেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন। তারপর সাংবাদিক বৈঠকে বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মমতা।
তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র যখন জিএসটির প্রস্তাব রেখেছিল তখন রাজ্য সরকার সমর্থন জানিয়েছিল। রাজ্যের এই পদক্ষেপকে ‘বড় ব্লান্ডার’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন মমতা। কারণ জিএসটির শেয়ারের টাকা অন্য রাজ্যকে দেওয়া হলেও বাংলাকে দেওয়া হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, রাজ্যের প্রাপ্য ট্যাক্স রাজ্যকে ফেরত দেওয়া উচিত।
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে দুর্যোগে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা যেমন দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক কর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগদান করেছিলেন আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে পরিষেবা প্রদান ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত বৈঠক করবেন তিনি। এরপর সাংবাদিক বৈঠক করে মমতার অভিযোগ, রাজ্যে কোনও দুর্যোগ হলে ন্যূনতম ক্ষতিপূরণ কেন্দ্রের কাছ থেকে পাওয়া যায় না।
ভারত সরকারকে ‘দালালদের সরকার’ বলে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেন্ট্রাল গভর্মেন্টের ডিফেন্স আর বর্ডার ছাড়া রাজ্যে আর কোনও মুভমেন্ট নেই। আমাদের টাকা ধ্বংস করবে, আবার আমাদেরই অপপ্রচার চালাবে। টোটাল লুট, আর বলছে ঝুট। টাকা তো দেয়ইনি উল্টে রাজ্য থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে। মানুষ হেলথ ইন্স্যুরেন্স থেকে সুবিধা পাচ্ছে, এর জন্য আমাদের ফান্ড থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা চলে গিয়েছে। কিন্তু এর জন্য মিরজাফর, গদ্দারদের কোনও ক্রেডিট নেই।’
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য জুড়ে প্রায় ১২ হাজারের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নতুন বাড়ির তৈরির জন্য আর্থিক সাহায্য করা হবে। প্রত্যেক উপভোক্তা ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে পাবেন। এছাড়াও এই সফরে উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এলাকায় গড়ে ওঠা নতুন শিল্প প্লান্টের উদ্বোধন করতে পারেন মমতা।
Advertisement