• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

এসআইআর ইস্যুতে দিল্লি অভিযানের হুঁশিয়ারি অভিষেকের

জোড়াসাঁকোর সভামঞ্চ থেকে তিনি জানান, এসআইআর–এর মাধ্যমে একজনের নামও ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেলে তৃণমূল কংগ্রেস দিল্লি অবধি পৌঁছে যাবে

এসআইআর তথা ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের প্রতিবাদে পথে নেমে দিল্লিতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জোড়াসাঁকোর সভামঞ্চ থেকে তিনি জানান, এসআইআর–এর মাধ্যমে একজনের নামও ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেলে তৃণমূল কংগ্রেস দিল্লি অবধি পৌঁছে যাবে। অভিষেকের কথায়, ‘দু’দিনের ডাকে তৃণমূল যদি এই মিছিল করতে পারে, আগামী দু’মাসের মধ্যে দিল্লিতে কী করতে পারে, সেটা বিজেপির বন্ধুদের একবার ভেবে দেখতে বলব।’
মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে এসআইআর প্রক্রিয়ার কাজ। এসআইআর ঘোষণা হওয়ার পর থেকে এদিন পর্যন্ত আতঙ্কে রাজ্যে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই সবের প্রতিবাদে মঙ্গলবার পথে নামেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মমতা–অভিষেক ছাড়াও মিছিলে ছিলেন একাধিক মন্ত্রী ও সাধারণ মানুষ। রাস্তার দুই ধারে জনতাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
রেড রোড থেকে এই মিছিল শুরু হয়ে ডোরিনা ক্রসিং থেকে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ জোড়াসাঁকো পর্যন্ত যায়। সেখানেই একটি সভা করে তৃণমূল। এই সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে অভিষেক জানিয়েছেন, এসআইআর–এর প্রতিবাদে আগামীদিনে তৃণমূল কংগ্রেস দিল্লিতে যাবে। বাংলার ক্ষমতা গোটা ভারতবর্ষ দেখবে। দিল্লি যাওয়ার জন্য কর্মী সমর্থকদের প্রস্তুত থাকারও বার্তা দেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘আগে মানুষ ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করতেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার পছন্দের ভোটার বেছে নিচ্ছেন।
আগে মানুষ বাছত সরকার, আর আজকে সরকার বাছছে ভোটার।’ রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করে অভিষেক জানিয়েছেন, তৃণমূল থাকতে একজনকেও বাংলাছাড়া করা যাবে না। গত কয়েক বছরের নির্বাচনে বার বার গেরুয়া শিবির রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছে। সেই কারণে হঠাৎ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে রাজ্যে এসআইআর–এর ঘোষণা করিয়েছে বিজেপি। বাংলার মাটি থেকে বৈধ কোনও ভোটারকে সরানো হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘বাংলাকে যাঁরা অপমান করেছে, যাঁরা বাংলাকে ভাতে মারার পরিকল্পনা করেছে, আগামীদিনে দিল্লিতে গিয়ে তার জবাব দেওয়া হবে।’
অভিষেক আরও জানিয়েছেন, তৃণমূলকে ধমকে চমকে লাভ হবে না। ১৯৯৩ সালের জুলাই মাসে সচিত্র পরিচয়পত্রের দাবিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দেন তিনি। সেই সময় সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকারের দাবিতে প্রাণ দিয়েছিলেন ১৩ জন। আগামীদিনে মানুষের অধিকারের জন্য প্রাণ দিতে হলে তাঁরা প্রস্তুত রয়েছেন।
কিন্তু কোনও শর্তেই দিল্লির কাছে মাথা নত না করার বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। রাজ্যে এসআইআর ঘোষণার পর থেকে মঙ্গলবার মিছিল হওয়া পর্যন্ত আতঙ্কে সাত জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। অভিষেক জানিয়েছেন, এই সব ব্যক্তির নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে। এই নিয়ে বলতে গিয়ে অভিষেকের কথায় উঠে আসে বীরভূমের অন্তসত্ত্বা সোনালি বিবির প্রসঙ্গও। তিনি জানান, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় সোনালির বাবা, মায়ের নাম থাকলেও অন্যায়ভাবে তাঁকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর জবাব বাংলা দেবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন অভিষেক।
বিজেপির সিএএ ক্যাম্প নিয়েও এদিন সতর্ক করে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সরাসরি বিজেপির ব্যানারে না করে শাখা সংগঠনের ব্যানারে এই ক্যাম্পগুলি করা হচ্ছে। বিজেপির এই ফাঁদে পা দিলে অসমের ১২ লক্ষ হিন্দু বাঙালির মতো অবস্থা হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন অভিষেক।

Advertisement

Advertisement