• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

আমেরিকার টমাহক–জল্পনার মাঝেই রাশিয়ার পর পর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

বাড়ছে ভূরাজনীতির উত্তাপ

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ইউক্রেন যুদ্ধে প্রভাব খাটাতে আমেরিকার উপর চাপ বাড়াতে কি নতুন পথ বেছে নিল ক্রেমলিন? ঠিক এই প্রশ্নেই উত্তপ্ত আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল। কারণ, এই সময়ে দাঁড়িয়ে রাশিয়া যে দুটি পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করল— তা নিছক কাকতালীয় নয় বলেই মনে করছেন অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ। রাজনৈতিক বার্তা? নাকি ট্রাম্পকে পরোক্ষে সতর্ক করার কৌশল? জল্পনার তুঙ্গে।

কয়েকদিন আগেই রাশিয়া সফলভাবে পরীক্ষা করেছে ‘বুরেভেস্টনিক’— একটি পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, যা অত্যন্ত কম উচ্চতায় উড়ে গিয়ে নজর এড়িয়ে লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে সক্ষম। তার পর গত বুধবার পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হয় ‘পোসেইডন’-এর সমুদ্রতলে বহু দূর ছুটে গিয়ে পরমাণু আঘাত হানতে সক্ষম ভয়ঙ্কর ড্রোন। পুতিন নিজে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন এর সাফল্যের কথা।

Advertisement

মার্কিন সংবাদমাধ্যমে দাবি, এই পরীক্ষাগুলি বহু আগেই প্রস্তুত ছিল। কিন্তু উৎক্ষেপণের সময় বেছে নিয়েছে রাশিয়ার রাজনৈতিক সমীকরণ বুঝে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেনকে টমাহক দেওয়ার সম্ভাবনার মুহূর্তে রাশিয়া আমেরিকাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে– তারাও পরমাণু শক্তিধর, এবং প্রয়োজনে প্রতিক্রিয়ার ক্ষমতা রাখে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ইউক্রেন বহুদিন ধরেই আমেরিকার কাছে দূরপাল্লার শক্তিশালী টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র চাইছে। কারণ সেই শক্তিশালী অস্ত্র হাতে এলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের অভিযান আরও ধ্বংসাত্মক হতে পারে। এ বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য এখনও খোলাখুলি সম্মতি দেননি। তবে পেন্টাগন জানিয়েছে, টমাহক পাঠানোতে তাদের ‘সমস্যা নেই’। কিন্তু শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্পই। এই অনিশ্চয়তার মুহূর্তেই রাশিয়ার পরমাণু পরীক্ষার নয়া অধ্যায়, যা নিয়ে বাড়ছে সন্দেহ।

যদিও টমাহক নিয়ে ভিন্ন সুর শোনাল রাশিয়া। সরকারি সংবাদমাধ্যম ‘তাস’-কে দেওয়া বিবৃতিতে রাশিয়ার বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র দেওয়া হলে যুদ্ধের সমাধান হবে না। বরং পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করবে।

এমন প্রেক্ষিতে রাশিয়ার পরমাণু শক্তির প্রদর্শন নতুন বার্তা বহন করছে বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞা, থমকে থাকা কূটনীতি, আর তার মাঝেই পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন–পরীক্ষা— পুরো পরিস্থিতিকে ঘিরে ধোঁয়াশা আরও ঘনীভূত হয়েছে।

উল্লেখ্য, ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার আগেই দাবি করেছিলেন, তিনি সহজেই রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে এখনও কোনও অগ্রগতি নেই। বার বার ফোনালাপ, বৈঠক— সব ব্যর্থ হয়েছে। শেষে হতাশ ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন, পুতিন যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিশ্রুতি না দিলে তিনি নতুন করে আলোচনায় বসবেন না। সম্প্রতি বুদাপেস্টে তাঁদের সাক্ষাতের কথা উঠেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি।

Advertisement