• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

অজিদের হারিয়ে ফাইনালে ভারত, ম্যাচসেরা জেমাইমা রদ্রিগেজের জয়গাথা

ব্যাট হাতে জেমাইমা রদ্রিগেজ যেন হয়ে উঠলেন স্থিতধী, সাহসের প্রতীক। ১৩৩ বলে ১২৭ রান অপরাজিত

এক বছর আগে দলের বাইরে ছিলেন। প্রতিটা দিন কেটেছে অনিশ্চয়তা এবং চরম অ্যাংজাইটির মধ্যে। সেই দুঃসময়কে পিছনে ফেলে জীবনের সেরা ইনিংসটা খেললেন বৃহস্পতিবার। ফেভারিট অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ভারতকে ফাইনালে তুললেন জেমাইমা রদ্রিগেজ। এরপর ভারতীয় ড্রেসিংরুম উৎসবে মাতল তাঁকে নিয়ে। ম্যাচ শেষে মাঠেই কেঁদে ফেলেছিল গোটা ভারতীয় দল। ‘হিরো’ জেমাইমাকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত উইমেন ইন ব্লু।

এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। জেতার জন্য হরমনপ্রীতদের সামনে লক্ষ্য ছিল ৩৩৯ রান।এত বড় টার্গেটের লক্ষ্যে নামলে ওপেনিং জুটির সফল হওয়াটা খুবই জরুরি। ভারত এদিন শুরুতেই শেফালিকে হারায়। মাত্র ১০ রান করেন তিনি। স্মৃতি মন্ধানা ও জেমাইমা রদ্রিগেজ দলকে এগিয়ে নিয়ে যায়। মোটামুটি ৬ রান ওভার পিছু রেখে স্কোরবোর্ড সচল রেখেছিলেন তাঁরা। হঠাৎই কিম গার্থের বলে আউট হন মন্ধানা। তিনি ২৪ রানে ফেরেন। তখন ভারতের স্কোর ৫৯/২। দশ ওভার চলছে।

Advertisement

এই পরিস্থিতে জুটি বাঁধলেন জেমাইমা ও অধিনায়ক হরমনপ্রীত কউর। অজি বোলিং কার্যত দুরমুশ করে দেন তাঁরা। এরপর সাদারল্যান্ডের বলে আউট হন হরমনপ্রীত। বিশ্বকাপের কোনও নকআউট ম্যাচে এটাই ভারতের সর্বোচ্চ জুটি। অন্যদিকে বিশ্বকাপের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ। এরপর আমনজ্যোতের সঙ্গে জেমাইমা জুটি বেঁধে দলকে নিয়ে গেলেন বিশ্বকাপে। নিজে অপরাজিত রইলেন ১২৭ রানে। ম্যাচের সেরা তিনি। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে খেলবে উইমেন ইন ব্লু-রা।

Advertisement

সাতবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারানো সহজ ছিল না। ব্যাট হাতে জেমাইমা রদ্রিগেজ যেন হয়ে উঠলেন স্থিতধী, সাহসের প্রতীক। ১৩৩ বলে ১২৭ রান অপরাজিত। শুধু ইনিংস নয়, এ যেন এক জয়যাত্রা। চোখের জলের ওপারে সাফল্যে পৌঁছোনোর গল্প। শেষ ওভারে যখন ভারতের জয় নিশ্চিত, তখনও জেমাইমার চোখে শুধুই জল। ম্যাচসেরা জেমাইমা এদিন বলেন, ‘আজ আমার পঞ্চাশ বা শতরান নয়, আজ ছিল ভারতের জয়।‘  তাঁর কথায়, ‘আমি জানি ভাগ্য আমাকে কয়েকটা সময়েই দেন। আমি শুধু মাঠে দাঁড়িয়ে ছিলাম, আর তিনি লড়েছেন আমার হয়ে।‘

অতীতের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘গত বছর আমি বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়েছিলাম। এবার ফিরে এসে নিজের ফর্মটা ধরে রাখার চেষ্টা করছিলাম। কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছিল না। প্রতিদিন প্রায় কেঁদেছি। মানসিকভাবে একদম ভেঙে পড়েছিলাম, অ্যাংজাইটিতে ভুগছিলাম। আশেপাশের মানুষরা আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছিল। আমি শুধু চেষ্টা করেছি মাঠে হাজির থাকতে, বাকিটা ঈশ্বর সামলে দিয়েছেন।‘ এ যেন কেবল খেলার নয়, জীবনেরও এক পাঠ। এক তরুণীর আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার কাব্য। এক বছরের কান্না, অ্যাংজাইটির চোখরাঙানি আর অবসাদের মধ্যেও আলো খুঁজে নেওয়ার নাম – জেমাইমা রদ্রিগেজ।

Advertisement