শুধু শারীরিক সম্পর্ক মানে এই নয় যে, ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা যাবে। এমনই পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাইকোর্টের। আদালত জানিয়েছে, অভিযোগের সমর্থনে উপযুক্ত প্রমাণ না থাকলে শুধুমাত্র ‘শারীরিক সম্পর্ক’ শব্দের ভিত্তিতে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। এই সংক্রান্ত মামলায় এক ব্যক্তিকে ধর্ষণের দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
পূর্ব ঘোষিত রায় বাতিল করে অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করেছে বিচারপতি মনোজ কুমার ওহরির বেঞ্চ। আদালতের মতে, ‘এই মামলার বিশেষ পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে যে শারীরিক সম্পর্ক শব্দ দুটি ব্যবহার করা হলেও তার সঙ্গে কোনও নির্দিষ্ট বা সমর্থনযোগ্য প্রমাণ জুড়ে দেওয়া হয়নি। তাই এটিকে ভিত্তি করে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।’ বিচারপতি জানিয়েছেন, ভারতীয় দণ্ডবিধি কিংবা পোকসো আইনে বা ‘শারীরিক সম্পর্ক’ শব্দদুটির কোনও আইনি সংজ্ঞা নেই। তাই এই দুই শব্দের অর্থ কী এবং তা আদৌ যৌন নিপীড়নের সমার্থক কিনা, সেই ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
Advertisement
বছর দুয়েক আগে দায়ের হওয়া এই মামলায় অভিযোগ ছিল, অভিযুক্ত ব্যক্তি ১৬ বছর বয়সি তরুণীর সঙ্গে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক’ গড়েছিলেন। তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে মৌখিক অভিযোগ করা হলেও কোনও ফরেনসিক বা চিকিৎসাগত প্রমাণ দিতে পারেননি ওই তরুণী। তাই সাজা বদলে বিচারপতি ওহরি জানিয়েছেন, ‘যদি বয়ানে প্রয়োজনীয় বিবরণ না থাকে, তবে আদালতের কর্তব্য সেই সাক্ষ্য থেকে প্রাসঙ্গিক তথ্য বের করতে প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করা এবং তরুণীটি সাক্ষ্য দিতে সক্ষম কিনা তা যাচাই করা।
Advertisement
আদালত কখনও নীরব দর্শক হতে পারে না; প্রয়োজনে সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারে।’ আইনজীবীরা মনে করছেন, এই রায় আগামী দিনে যৌন অপরাধ সংক্রান্ত মামলাগুলির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে থাকবে। প্রামাণই এখানে মূল হিসেবে গণ্য হবে অভিযোগের ভাষা নয়। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করাই আদালতের কাজ।
Advertisement



