• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

সুপার কাপের লড়াইয়ে তিন প্রধানের বড় চ্যালেঞ্জ

আইএফএ শিল্ডে মোহনবাগান এসজি চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। ৩১ অক্টোবর সুপার কাপের ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের গুরুত্বপূর্ণ ডার্বি আছে।

প্রতীকী চিত্র

রণজিৎ দাস

আসন্ন সুপার কাপে আইএসএল এবং আই-লিগের দলগুলোর কাছে তথাকথিত ‘তিন প্রধান’ অর্থাৎ মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের চ্যালেঞ্জ বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং বহু প্রতীক্ষিত।

Advertisement

সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ এআইএফএফ সুপার কাপ অক্টোবর ২৫ থেকে শুরু হচ্ছে এবং এই টুর্নামেন্টের ড্র ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। ১৬ দলের সুপার কাপের ৪টে গ্রুপে খেলা হবে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দল পরবর্তী নকআউটে অংশগ্রহন করবে।

Advertisement

তিন প্রধানের মধ্যে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান একই গ্রুপে পড়েছে। অর্থাৎ গ্রুপ পর্যায় থেকে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের মধ্যে একজন বিদায় নেবে। গ্রুপ-সি’তে মহামেডান স্পোটিং ক্লাব পড়েছে। আইএসএলের ১২দল ও আমাদিগের ৪টে দল নিয়ে সুপার কাপের খেলা হবে। আইলিগের চার্চিল ব্রার্দাস ও রিয়েল কাশ্মীর না খেলায়, রাজস্থান এফসি ও ডেম্পো এফসি খেলার সুযোগ পেয়েছে। প্রতি গ্রুপে আইএসএলের তিনটে ও আমাদিগের ১টি করে দল আছে।

তিন প্রধানের চ্যালেঞ্জ: এই তিন ক্লাবের বিশাল এবং আবেগপ্রবণ ফ্যানবেস যেকোনো টুর্নামেন্টেই তাদের জন্য দ্বাদশ খেলোয়াড়ের ভূমিকা পালন করে। ঐতিহ্য এবং ডার্বির উত্তেজনা সুপার কাপে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে।

আইএসএল-এ খেলার কারণে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এবং ইস্টবেঙ্গল এফসি-এর স্কোয়াডগুলি সাধারণত বেশ শক্তিশালী এবং আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত। মহামেডান স্পোর্টিংও অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক ট্রান্সফার ব্যান থাকার কারনে ভালো দল গঠন করতে পারেনি।
সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন দল ২০২৬-২৭ মরশুমের এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-এর প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে (প্রয়োজনীয় লাইসেন্স সাপেক্ষে)। এই বড় পুরস্কার জেতার জন্য তিন প্রধানই মরিয়া থাকবে। যদিওবা, মোহনবাগান এসজি’কে এএফসি একবছরের জন্য মহাদেশীয় প্রতিযোগিতায় খেলার ক্ষেত্রে সাসপেন্ড করেছে। ফলে মোহনবাগান চ্যাম্পিয়ান হলে সুপার কাপের রার্নাস এএফসি চ্যাম্পিয়ান লিগ-টু খেলার সুযোগ পাবে।

আইএসএল ও আই-লিগ দলগুলোর চ্যালেঞ্জ: আইএসএল দল: নর্থইস্ট এফসি, এফসি গোয়া, কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি, বেঙ্গালুরু এফসি, পাঞ্জাব এফসি-এর মতো দলগুলিও শক্তিশালী এবং সুপার কাপ জয়ের সামর্থ্য রাখে। তারা ‘তিন প্রধান’ কে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলবে, বিশেষত গ্রুপ পর্বে যখন তাদের মধ্যে সরাসরি ম্যাচ হবে। উদাহরণস্বরূপ, মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল একই গ্রুপ ‘এ’-তে রয়েছে চেন্নাইয়েন এফসি এবং রিয়াল কাশ্মীর এফসি-এর পরিবর্তে ডেম্পো এফসি। গ্রুপ-সিতে মহামেডানের সঙ্গে বেঙ্গালুরু ও পাঞ্জাব এফসির মত শক্তিশালী টিম আছে।

আই-লিগ দল: ইন্টার কাশী, টেম্পো এফসি, গোকুলাম কেরালা এফসি, এবং রাজস্থান ইউনাইটেড এফসি-এর মতো আই-লিগের দলগুলি সুপার কাপকে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণের একটি বড় মঞ্চ হিসেবে দেখবে। তারা আইএসএল ক্লাবগুলোর তুলনায় কম সুযোগ পেলেও, নকআউট টুর্নামেন্টে বড় দলকে হারানোর ক্ষমতা রাখে এবং অনেক সময় চমক দেখায়।

সাধারণত সুপার কাপ মৌসুমের শেষে হলেও, এবার এটি মৌসুমের শুরুতে হচ্ছে। এটি খেলোয়াড়দের ফিটনেস এবং দলগুলোর প্রস্তুতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। যা ‘তিন প্রধান’ সহ সব দলের জন্যই একটি চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে কলকাতা লিগ, ডুরান্ড কাপ ও আইএফএ শিল্ড খেলে কলকাতার দলগুলো প্রস্ততিতে এগিয়ে আছে।

আসন্ন সুপার কাপটি শুধু একটি ট্রফির লড়াই নয়, বরং ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ স্তরের ক্লাবগুলির মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যের এক কঠিন পরীক্ষা। ‘তিন প্রধান’ তাদের ঐতিহ্য এবং শক্তি নিয়ে মাঠে নামবে, কিন্তু অন্যান্য আইএসএল ও আই-লিগের দলগুলোও তাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত।

আইএফএ শিল্ডে মোহনবাগান এসজি চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। ৩১ অক্টোবর সুপার কাপের ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের গুরুত্বপূর্ণ ডার্বি আছে। গ্রুপের শীর্ষস্হান দখল করে পরবর্তী রাউন্ডে যেতে হলে দুটো দলকেই ঐ ম্যাচ সম্ভবতঃ জিততেই হবে। দুই প্রধানের মধ্যে যে দল পরবর্তী রাউন্ডে যাবে তাকে সম্ভবতঃ পাঞ্জাব এফসির মত শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে খেলতে হবে। তবে,দুই প্রধানের একজনের ফাইনালে যাওয়া অসম্ভব নয়। কিন্তু মহামেডান স্পোর্টিংয়ের পক্ষে গ্রুপ পর্যায়ের বাধা টপকে পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়াটাই কঠিন কাজ হয়ে উঠবে। তাই সুপার কাপ বাংলায় আনতে ইস্টবেঙ্গল এফসি কিংবা মোহনবাগান এসজিকে ফাইনালে উঠতে হবে।

Advertisement