আমেরিকায় গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত কূটনীতিবিদ অ্যাশলে জে টেলিস। তিনি আমেরিকার ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক। সেই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা। অবৈধ ভাবে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করার অভিযোগে অ্যাশলে জে টেলিসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টেলিসের ভার্জিনিয়ার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে হাজার হাজার পৃষ্ঠার ‘গোপন’ নথি।
সংবেদনশীল নথিপত্র মজুত এবং চিনের আধিকারিকদের সঙ্গে গোপনে সাক্ষাতের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। দোষী সাব্যস্ত হলে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ২ লক্ষ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। যা ভারতীয় মূল্যে প্রায় ২ কোটি ২১ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকার কাছাকাছি।
Advertisement
বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ওই কূটনীতিকের বিরুদ্ধে ফেডারেল তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছে ভার্জিনিয়ার ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট মার্কিন অ্যাটর্নি অফিস। গত সপ্তাহের শেষে তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত নথিপত্র অবৈধ ভাবে নিজের কাছে রাখার অভিযোগ টেলিসের বিরুদ্ধে। যা আইন ভাঙার সামিল। শুধু তাই নয়, সুরক্ষিত স্থান থেকে গোপন নথিপত্র সরানোরও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে গোপনে চিনা আধিকারিকদের সঙ্গে দেখাও করেন বলে দাবি। সব অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
Advertisement
গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক বার চিনা কর্তাদের সঙ্গে দেখা করার অভিযোগ রয়েছে টেলিসের বিরুদ্ধে। ১৫ সেপ্টেম্বর ভার্জিনিয়ার ফেয়ারফ্যাক্সের একটি রেস্তোরাঁয় চিনের এক আধিকারিকের সঙ্গে দেখা যায় তাঁকে। একটি মুখবন্ধ খাম ওই আধিকারিকের হাতে টেলিস তুলে দেন বলে দাবি করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, চিনের আধিকারিকদের থেকে উপহারও নিতেও দেখা গেছে তাঁকে। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দিয়ে টেলিসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি ঘোষণা করেছেন মার্কিন অ্যাটর্নি লিন্ডসে হ্যালিগান।
তিনি জানিয়েছেন, ‘অভিযুক্তের আচরণ আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে তাঁর বিরুদ্ধে।’ তবে গোটা বিষয়টি এখনও পর্যন্ত কিছুই জানায়নি ট্রাম্প প্রশাসন। তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত টেলিসকে নির্দোষ বলেই গণ্য করা হবে।
অ্যাশলে জে টেলিসের জন্ম ভারতের মুম্বইয়ে। বয়স ৬৪ বছর। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছেন। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ এবং পিএইচডি করেন। ২০০১ সালে যোগ দেন মার্কিন প্রশাসনে। দক্ষিণ এশীয় নিরাপত্তা এবং মার্কিন-
ভারত পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়ে ওয়াশিংটনের অন্যতম শীর্ষ বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিবেচনা করা হয় টেলিককে। মার্কিন সরকারের আন্ডার সেক্রেটারি অফ স্টেটের সিনিয়র রাজনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেডব্লিউ বুশের বিশেষ সহকারী হিসাবে কাজ করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে। আমেরিকা-ভারত অসামরিক পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন অ্যাশলে জে টেলিস।
Advertisement



