ওয়াশিংটন: সাম্প্রতিক কূটনৈতিক দোলাচলের মধ্যেই সোমবার ওয়াশিংটনে বৈঠকে বসেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিও। বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে রুবিও স্পষ্ট জানান, ‘ভারত আমেরিকার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক অংশীদার।’ দু’দেশের মধ্যে চলা শুল্ক বিরোধ এবং বাণিজ্যিক দোলাচলের প্রেক্ষিতে এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
এক ঘণ্টা দীর্ঘ এই বৈঠকে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, ওষুধ উৎপাদন, মূল্যবান খনিজের মতো একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন বিদেশ দপ্তর। ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। রুবিওর সঙ্গে আলোচনার পর জয়শঙ্কর সমাজমাধ্যমে জানান, ‘মার্কো রুবিওর সঙ্গে দেখা করে ভালো লাগল। দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে আমাদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’ যদিও আলোচনার বিস্তারিত বিষয়ে তিনি মুখ খোলেননি।
Advertisement
গত কয়েক মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আনা চড়া শুল্কনীতির জেরে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে সমস্যা তৈরি হয়। গত জুলাইয়ে ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ এবং রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে আরও ২৫ শতাংশ ‘শাস্তিমূলক শুল্ক’ চাপিয়েছিল আমেরিকা। ফলে মোট ৫০ শতাংশ শুল্কে কার্যত বাণিজ্য হোঁচট খায়। ভারত ছাড়া কেবল ব্রাজিলের উপরই এমন উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
Advertisement
তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎপর হয়েছে হোয়াইট হাউস। গত সপ্তাহেই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির লক্ষ্যে আলোচনার জন্য আমেরিকার একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল দিল্লি সফর করেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ধরেছে এবং সেই সমস্যা মেটাতে তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী।
ভারতের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরনও আশাপ্রকাশ করেছেন, আগামী ৮-১০ সপ্তাহের মধ্যেই শুল্ক-সংক্রান্ত জটিলতার সমাধান সম্ভব। তাঁর মতে, উভয় পক্ষই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার নিষ্পত্তিতে আগ্রহী। এই প্রেক্ষাপটে জয়শঙ্কর-রুবিও বৈঠকে বাণিজ্যের প্রসঙ্গ উঠে আসা এবং রুবিওর ‘ভারত গুরুত্বপূর্ণ’ মন্তব্যকে অনেকেই সম্পর্কে ফাটল মেরামতির প্রথম ধাপ হিসেবে দেখছেন।
Advertisement



