বিলেতের মাটিতে বাঙালি চিকিত্সকের ছ’বছরের কারাদণ্ড। একাধিক মহিলা সহকর্মীকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সাজাপ্রাপ্ত ওই চিকিত্সকের নাম অমল বসু। ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ সাল, এই পাঁচ বছরে একাধিক মহিলা সহকর্মীকে যৌন হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। এবার সেই অভিযোগ প্রমাণিত হল ব্রিটেনের আদালতে। ছ’বছরের কারাদণ্ডের রায় দিল আদালত। প্রসঙ্গত, ল্যাঙ্কাস্টারের বাসিন্দা অমল বসু কর্মরত ছিলেন ব্ল্যাকপুল ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে। কার্ডিও ভাস্কুলার সার্জন হিসাবে ওই হাসপাতালে তিনি কর্মরত ছিলেন বলে খবর।
২০২২ সালে ওই চিকিত্সকের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে একজন মহিলা সহকর্মী প্রেস্টন আদালতে যৌন হেনস্থার অভিযোগ জানান। এরপরেই তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মহিলা মুখ খুলতে শুরু করেন। তাঁদের গোপন জবানবন্দিও আদালতে নেওয়া হয় বলে খবর। সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, অমল তাঁর পদের জোরে মহিলাকর্মীদের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে বিভিন্ন অশ্লীল বার্তা পাঠাতেন। নানা কুরুচিকর মন্তব্য করতেন বলেও জানিয়েছেন একাধিক মহিলা। নারী শরীরের গঠন, বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের আকার-আকৃতি নিয়েও কুরুচিকর মন্তব্য করতেন বলে অভিযোগ। কোনও কোনও মহিলাকে ‘টাটকা মাংস’ হিসাবে উল্লেখ করতেন বলে দাবি করা হয়েছে। অনেকে চিকিত্সক অমলের বিরুদ্ধে শারীরিক নিগ্রহেরও অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এতদিন ভয়ে নির্যাতিতারা মুখ খুলতে পারেননি। এমনকি অনেকে বাধ্য হয়ে হাসপাতালের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।
Advertisement
এদিকে অভিযুক্ত চিকিত্সক অমল বসু তাঁর বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলিকে ‘নিছক মজা’ বলে দাবি করেছেন। গত জুন মাসে প্রেস্টন ক্রাউন কোর্ট অমলকে দোষী সাব্যস্ত করে। গত মঙ্গলবার অমলকে ছ’বছরের কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করা হয়। মোট পাঁচজন মহিলা ১২টি অভিযোগ করেছিলেন। সবগুলি অভিযোগই পাঁচ বছরের মধ্যে ঘটেছে বলে সূত্রের খবর।
Advertisement
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চ মাসে অক্সফোর্ডের কেলগস কলেজে বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। আরজি করের তরুণী চিকিত্সকের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছিল কলকাতা তথা গোটা বিশ্ব। দেশ এবং বিশ্বের কোণা থেকে এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রীর ব্রিটেন সফরের সময় কিছু প্রবাসী ভারতীয় বিক্ষোভ দেখান। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, সেই প্রবাসী প্রতিবাদী ভারতীয়দের মধ্যে চিকিত্সক অমল বসু অন্যতম ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। অনেকের দাবি, বিলেতের মাটিতে বিক্ষোভের অন্যতম হোতা ছিলেন এই চিকিত্সক। যদিও বিক্ষোভ দেখানোর বিষয়ে কোনও প্রামাণ্য ছবি বা ভিডিও ক্লিপ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসেনি। কেলগস কলেজের তরফেও এই বিষয় নিয়ে কিছু জানানো হয়নি।
Advertisement



