প্রশ্ন: শার্লক হোমসের সঙ্গে বাঙালির ছেলেবেলা জড়িয়ে। তবে এই ছবির শার্লক হোমস নিয়ে কী বলবে, গৌরব?
উত্তর: এ কথা সত্যিই, আমাদের বেড়ে ওঠা, ছোটবেলা সব জুড়ে শার্লক হোমস। গোয়েন্দা গল্প মানেই হোমস। ফেলুদা, ব্যোমকেশের পাশাপাশি বাঙালিই হোমসকে আপন করেছে। কেউ ইংরাজিতে পড়েছেন, কেউ বাংলায়। সত্যজিৎ রায় নিজে লিখে গিয়েছেন, ফেলুদা গুরু ভাবে হোমসকে।
Advertisement
তবে এই ছবি এসকে মুভিজ ও সায়ন্তনের এক অভিনব উদ্যোগ। এই ছবিতে হোমস বাঙালি। মানে শার্লক হোমস যদি বাঙালি হতেন তাহলে কেমন হতেন। আসলে অনেক ইউনিভার্সে অনেক গল্প হয়। এটা তেমনই এক ইউনিভার্স, যেখানে শার্লক হোমস বাঙালি। লন্ডনের গল্পের প্রেক্ষাপট। মানুষ ভালোবাসবেন, না বাসবেন না, জানা নেই। তবে এটা একটা অনবদ্য বিষয়। এটা যদি ক্লিক করে তাহলে দারুণ ব্যাপার হবে। শার্লক হোমসকে নিয়ে বাংলায় আরও কাজ হবে।
Advertisement
প্রশ্ন: তোমার চরিত্র নিয়ে কিছু বলো।
উত্তর: আমার চরিত্রটা দারুণ। যাঁরা ‘হাউন্ডস অফ দ্য বাস্কারভিল’ পড়েছেন, তাঁরা জানেন, একটি অভিজাত পরিবারের রহস্যের গল্প। কেন্দ্রবিন্দু হেনরি বাস্কারভিল নামে একজন। তার পরিবারে একটি অশরীরী হাউন্ড আছে। তার বংশের মানুষ মানে পূর্বপুরুষরা এই কারণে মারা যায়। তার কাছেও চিঠি আসে, বাস্কারভিলে গেলে তোমার মৃত্যু আসন্ন। কিন্তু তার কাকা মারা যাওয়ায় তাকে যেতে হয়। সে শার্লক হোমসকে ডাকে। ও বলে, আমার কিছু হলে তার ইনভেস্টিগেশনও তুমিই করবে। এটা একটা দারুণ চরিত্র। আমি এই চরিত্র করতে পেরেছি, এটা আমার ভালো লাগার জায়গা। ছোটবেলায় যখন পড়েছিলাম, তখনই আমার হেনরির চরিত্রটাকে খুব ভালো লাগত। মনে হত, একটা হিরোইক চরিত্র।
প্রশ্ন: পরিচালক সায়ন্তনের সঙ্গে তোমার একটা জুটি আছে তাই না? সায়ন্তনের ছবি মানেই তুই আছো।
উত্তর: (হাসি)। না, তা নয়। তাহলে মানুষের একঘেয়ে লাগবে। তবে লাকিলি আমার সঙ্গে সায়ন্তনের একটা ওয়েভ ম্যাচ আছে। ওর আমার প্রতি একটা ভালোবাসা আছে হয়তো। আসলে ও খুব দক্ষ পরিচালক। ওর সঙ্গে কাজ করা আনন্দের। ও খুব টু দ্য পয়েন্ট। জানে কী চায় ও, কী ফ্রেম চায়, কী হলে ভালো লাগবে। আর তার থেকেও বড় বিষয়, ও যে ধরনের ছবি বানায় তাতে আমি কানেক্ট করতে পারি। ঋদ্ধিমার জন্য ওর সঙ্গে আমার আলাপ। এখন ব্যাপারটা এমন হয়ে গিয়েছে যে, ও আমাকে একটা পাশিং শট দিতে বললেও দেব। আমার বিশ্বাস, ও আমাকে ফেলে দেওয়ার মত কোনও
চরিত্র দেবে না।
প্রশ্ন: কাজের পাশাপাশি স্ত্রী সন্তানকে সময় দেওয়া হয়? সামনেই তো পুজো। কী প্ল্যান?
উত্তর: কাজের পর পুরো সময় পরিবারকে। আর পুজোয় কিছু কাজ আছে। কাজ মিটিয়েই আমরা তিনজন বেড়াতে যাব।
প্রশ্ন: তোমার বাবার প্রিয় তো জঙ্গল। তোমার কী প্রিয়?
উত্তর: আমারও জঙ্গল প্রিয়। আমার আসলে ঘুরতে যাওয়াটাই ভালো লাগে। আমার বাবা-মা, আমার স্ত্রীর বাবা-মা, ছোটবেলা থেকেই ঘোরার পোকা ঢুকিয়ে দিয়েছিল বোধহয়। তবে ছেলে ছোট বলে বেরোতে পারি না প্রপারলি। ছেলে বড় হলে আবার জঙ্গলে ঘুরে বেড়াবো।
প্রশ্ন: এখন বাংলা ছবির জন্য আলাদা সময় ধার্য করা হয়েছে। তবে এ কথাও ঠিক ছবি করতে গিয়ে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তুমি অভিনেতা হিসেবে এটা নিয়ে কী বলবে?
উত্তর: এই বছরটা বাংলা ছবির জন্য খুব ভালো বছর। মানুষ হলমুখী হচ্ছেন, এর থেকে ভালো আর কী হতে পারে। আমি চাই, এইটা যেন বজায় থাকে। মানুষ বাংলা ছবি দেখুন। এর কৃতিত্ব আমি পরিচালক- প্রযোজকদের দেবো। যেমন, ‘খাদান’ ওয়ার্ক করেছে, তেমন ‘একেন বাবু’, ‘ধূমকেতু’ মানুষ দেখেছেন, আবার ‘কিলবিল সোসাইটি’। সব মিলিয়ে মানুষ কী দেখবেন, সেটা ক্লিক করছে। তাই মানুষ হলমুখী হচ্ছেন।
আর বাংলা ছবির জন্য আলাদা সময় বেঁধে দেওয়া, এটাও একটা দারুণ ব্যাপার। দেখো, বড় বাজেটের বাংলা ছবি জায়গা পাবেই। কিন্তু অনেক ছোট ছবি আছে, যেগুলো শো-টাইম পায় না। প্রাইম টাইমে শো পেলে, মানুষ দেখবেন। ভালো লাগলে, একটা মৌখিক পাবলিসিটি হবে। সব মিলিয়ে বাংলা ছবির জন্য এটা খুব ভালো পদক্ষেপ।
প্রশ্ন: ছবি মুক্তি পেলে তোমার বাবা-মা দেখেন নিশ্চয়। কী বলেন?
উত্তর: হ্যাঁ, দেখেন। ভালো লাগলে ভালো বলেন, খারাপ লাগলেও বলেন। অভিনয় নিয়ে আমাকে খুব ভালো হয়েছে বলেন না। তবে বাবা-মা ভালো বললে আনন্দ হয়।
প্রশ্ন: চরিত্র বাছা নিয়ে বাবার সঙ্গে কথা হয় এখনও?
উত্তর: না। বাবা আগে থেকেই বলেছিলেন, যা ভালো লাগবে করবে। চরিত্র নিয়ে কথা হয় না। কাজ নিয়েই কম কথা হয়। তবে কোথাও আটকালে কথা হয়।
প্রশ্ন: আর ঋদ্ধিমা?
উত্তর: ঋদ্ধিমা একটু বায়াসড। আমিও তাই। কিন্তু ওর থেকে কাজের সঠিক রিভিউ পাওয়া যায়।
Advertisement



