• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

প্রসূতি মৃত্যু রুখতে ফ্লুইড থেরাপি নিয়ে নয়া গাইডলাইন রাজ্যের

সিজারিয়ানের পর ফ্লুইড থেরাপি বা স্যালাইন ব্যবস্থাপনায় ভুলই একাধিক মৃত্যুর মূল কারণ বলে উঠে এসেছে প্রাথমিক তদন্তে।

রাজ্যে সিজার অপারেশনের পর প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা বাড়তে থাকায় গভীর উদ্বেগে স্বাস্থ্য দপ্তর। সরকারি হাসপাতালে একের পর এক মৃত্যুর প্রেক্ষিতে এবার কড়া পদক্ষেপ করা হল। সিজারিয়ানের পর ফ্লুইড থেরাপি বা স্যালাইন ব্যবস্থাপনায় ভুলই একাধিক মৃত্যুর মূল কারণ বলে উঠে এসেছে প্রাথমিক তদন্তে। সেই কারণেই ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত নির্দিষ্ট ও বাধ্যতামূলক গাইডলাইন প্রকাশ করল স্বাস্থ্যভবন।

সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ সহ একাধিক হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর পর চিকিৎসকদের ভূমিকা ও ফ্লুইড ব্যবস্থাপনা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে অপারেশনের পরে সঠিক পরিমাণে বা সঠিক পদ্ধতিতে স্যালাইন, রিঙ্গার্স ল্যাকটেট কিংবা অন্যান্য ফ্লুইড না দেওয়ার ফলে রোগীর শরীরে হাইপো বা হাইপার-ভোলেমিয়া তৈরি হচ্ছে। এতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, হৃদযন্ত্র বিকল হওয়া বা শকের মতো পরিস্থিতি দেখা দিচ্ছে। এই অবস্থায় রোগীকে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

Advertisement

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা যৌথভাবে একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন। ওই নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ, জেলা হাসপাতাল এবং অন্যান্য সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সিজারিয়ান প্রসূতির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ফ্লুইড অবশ্যই স্বচ্ছ ও পরিষ্কার হতে হবে। রিঙ্গার্স ল্যাকটেট ব্যবহার করতে হলে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে করতে হবে। ক্রিস্টালয়েড বা কোলয়েড জাতীয় ফ্লুইড ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া রোগীর শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী স্যালাইনের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। বিশেষ করে প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া ও হৃদরোগে আক্রান্ত প্রসূতির ক্ষেত্রে ফ্লুইড ব্যবহারে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

এই গাইডলাইন শুধু একটি পরামর্শ নয়, বরং তা প্রতিটি সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের দাবি, সঠিকভাবে এই নির্দেশিকা মেনে চললে প্রসূতি মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব হবে। রাজ্যের চিকিৎসাক্ষেত্রে এই নতুন নির্দেশিকা কতটা বাস্তবায়িত হয় এবং এর ফলে প্রসূতি মৃত্যুর হার কতটা কমানো যায়, সেদিকেই এখন নজর বিশেষজ্ঞ মহলের।

Advertisement