• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

হরিয়ানার অভিবাসী নীতি নিয়ে প্রশ্ন আদালতের

আবেদনকারীর আইনজীবী ভাবপ্রীত সিং ধাট বলেন, 'গুরুগ্রামে আটক এক হাজারেরও বেশি শ্রমিক বাংলাদেশি বলে অভিযোগ করা হয়েছিল।'

প্রতীকী চিত্র

অবৈধ অভিবাসী শ্রমিকদের ধরপাকড়ের ক্ষেত্রে তাদের পরিচয়পত্র যাচাই করার জন্য রাজ্যের কোনও স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর তথা এসওপি আছে কিনা – হরিয়ানা সরকারকে প্রশ্ন করেছে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। সম্প্রতি অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে হরিয়ানা পুলিশের অভিযানের পর এই প্রশ্ন করা হয়। অভিযোগ, হরিয়ানার গুরুগ্রামে বেশ কয়েক জনকে ভুল করে আটক করা হয়েছে।শুধু পাকড়াও করাই নয়, তাঁদের এক ‘অমানবিক’ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে রেখে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। এই বিতর্কের আবহে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টে।

জুলাই মাসে গুরুগ্রামে বেশ কয়েকজন বাঙালিভাষী ব্যক্তিকে বাংলাদেশি নাগরিক সন্দেহে আটক করা হয়। পরে নথিপত্র খতিয়ে দেখার পর দেখা যায়, তাঁরা পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের নাগরিক। এরপর ফের তাঁদের নথি যাচাই-বাছাইয়ের পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

দিল্লির বাসিন্দা নির্মল গোরানা বিষয়টি নিয়ে মামলা দায়ের করেন। তাঁর আবেদনে যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে, হরিয়ানা বা পাঞ্জাব – কোথাও যথাযথ যাচাইকরণ প্রক্রিয়া নেই। যে নিয়মগুলি রয়েছে তা স্পষ্টতই লঙ্ঘন করা হচ্ছে।আবেদনকারীর আইনজীবীর আর্জি, অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করতে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বনের নির্দেশ দিক আদালত।

Advertisement

আবেদনকারীর আইনজীবী আদালতে জানান, ভাষাগত দিক থেকে সংখ্যালঘু কিছু মানুষকে ধরে এনে অবৈধ অভিবাসী বলে চিহ্নিত করছে গুরুগ্রাম পুলিশ। তাঁরা আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড-সহ অন্য নথি দেখানোর পরেও ধরপাকড় করা হয়।

আবেদনকারীর আইনজীবী ভাবপ্রীত সিং ধাট বলেন, ‘গুরুগ্রামে আটক এক হাজারেরও বেশি শ্রমিক বাংলাদেশি বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। তাদের অনেকের কাছে বৈধ নথি ছিল, অনেকে পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের বাসিন্দা ছিলেন। শেষ পর্যন্ত কয়েকজনকে মুক্তি দেওয়া হলেও আটকের করার ক্ষেত্রে কোনও এসওপি ছিল না।সবাইকে ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছিল এবং অমানবিক আচরণের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।’ আবেদনকারী আরও জানান, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এবং স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত আটক হওয়া ব্যক্তিদের ভারতীয় নাগরিক বলে চিহ্নিত করার পরেও আটক হওয়া ব্যক্তিদের বেশ কয়েক দিন আটকে রাখা হয়।
অন্য দিকে, হরিয়ানা সরকারের আইনজীবীর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মতোই কাজ করেছে সে রাজ্যের পুলিশ। পুলিশের পদক্ষেপকে সমর্থন করে হরিয়ানার আইনজীবী আদালতকে বলেন যে, পুলিশ আধিকারিকরা কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে কাজ করছেন। ২০২৫ সালের মে মাসে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে ৩০দিনের মধ্যে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের শনাক্ত ও নির্বাসনের জন্য প্রতিটি জেলায় বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করতে বলেছিল। হরিয়ানা সরকার জানিয়েছে, ‘অবৈধ অভিবাসীদের খুঁজে বের করার জন্য গুরুগ্রামে বিশেষ তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। যাঁদের কাছে নাগরিকত্বের বৈধ প্রমাণ ছিল না, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ অনুসারে, তাঁদের হোল্ডিং সেন্টারে রাখা হয়েছিল।’

বেঞ্চ হরিয়ানা সরকারকে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসওপি, যদি থাকে, তা নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ওয়েবসাইটে এই সংক্রান্ত কোনও নথি রয়েছে কি না, তা ‘রেকর্ড’ আকারে আদালতে জমা দিতে হবে হরিয়ানা সরকারকে। নয়তো হরিয়ানা সরকারকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে যে, এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনও নির্দিষ্ট পদ্ধতি তথা এসওপি নেই।

Advertisement