আন্তর্জাতিক পরিযায়ী সংকটের মর্মান্তিক চিত্র উঠে এল ইয়েমেন উপকূল থেকে। আবিয়ান প্রদেশ সংলগ্ন এডেন উপসাগরে উল্টে গেল আফ্রিকা থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের নৌকা। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত অন্তত ৬৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৭৭ জন। জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে মাত্র ১২ জনকে, যাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।
রবিবার ইথিওপিয়ার ১৫৪ জন পরিযায়ী শ্রমিককে নিয়ে ইয়েমেনের দিকে যাত্রা করছিল একটি নৌকা। উদ্দেশ্য ছিল উন্নত জীবনের আশায় পশ্চিম এশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা। কিন্তু তার আগেই ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটে। ইয়েমেনের খানফার জেলার উপকূলে সমুদ্র থেকে ইতিমধ্যে ৬৮ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তল্লাশি চলছে নিখোঁজদের খোঁজে।
Advertisement
এই ঘটনা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, কী ভয়ানক ঝুঁকি নিয়েই উন্নত জীবনের স্বপ্নে ভেসে পড়ছেন আফ্রিকার বহু মানুষ। পরিযায়ী শ্রমিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন’-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজারেরও বেশি পরিযায়ী ইয়েমেনে প্রবেশ করেছেন। ২০২৩ সালে সংখ্যাটি ছিল প্রায় ৯৭ হাজার।
Advertisement
‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন’-এর মতে, শ্রমিকদের একটি বড় অংশই অসাধু দালালচক্রের খপ্পরে পড়ে। মোটা অর্থের বিনিময়ে তাঁদের ঠাসাঠাসি করে তোলা হয় নড়বড়ে ও অস্বাস্থ্যকর নৌকায়। এমন অব্যবস্থাপনার জেরে প্রায়ই ঘটে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। চলতি বছরের মার্চ মাসেও ইয়েমেনের উপকূলে চারটি নৌকা ডুবে দু’জনের মৃত্যু হয়, নিখোঁজ ছিলেন ১৮৬ জন।
এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক মহলে পরিযায়ী সংকট এবং মানবপাচার চক্র রুখতে আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি উঠছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কেবল নজরদারি বা তল্লাশি অভিযান নয়, প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি কৌশল। এর ফলে একদিকে যেমন মানুষের জীবনের ঝুঁকি কমানো যাবে, ঠিক তেমনই এই অবৈধ জলপথ বন্ধ করা সম্ভব হবে।
Advertisement



