মাসখানেকের বিরতির পর আবারও রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত ইউক্রেন। শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, আগামী সপ্তাহে নতুন আলোচনার প্রস্তাব মস্কোর উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। বল এখন রাশিয়ার কোর্টে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের ১১৭৭-তম দিনে প্রথমবার যুদ্ধবিরতি আলোচনায় বসেছিল দুই দেশ। যদিও সেই আলোচনা থেকে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। শুধুমাত্র বন্দি বিনিময়ের বিষয়ে সাময়িক সমঝোতায় পৌঁছেছিল দু’পক্ষ।
এই প্রেক্ষিতেই নতুন করে আলোচনার উদ্যোগের কথা জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘আলোচনার গতি আরও বৃদ্ধি করা উচিত। শান্তি নিশ্চিত করতে হলে নেতৃত্ব পর্যায়ের বৈঠক হওয়া দরকার। আমি প্রয়োজনে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গেও সরাসরি আলোচনায় প্রস্তুত।’ ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব রুস্তেম উমেরভ ইতিমধ্যেই রুশ প্রতিনিধিদের নতুন বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
Advertisement
কিভের সঙ্গে শান্তি সমঝোতায় আসার জন্য সোমবার মস্কোকে ৫০ দিনের সময় দিয়েছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে যুদ্ধ না থামলে রাশিয়ার বাণিজ্যিক বন্ধুদের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। যদি পুতিন সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া নিজেদের শর্ত মেনেই ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করবে। অর্থাৎ, তৃতীয় কোনও দেশের চাপানো শর্তে রাজি না হওয়ার বার্তা দিয়েছিল রাশিয়া। মস্কোর বক্তব্য, ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা হবে রাশিয়ার নিজের শর্ত মেনেই।
Advertisement
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’-এর ঘোষণা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই দিনই ইউক্রেনের একাধিক সামরিক লক্ষ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালায় রুশ বাহিনী। পাশাপাশি, স্থল ও জলপথে আক্রমণ চালিয়ে ঢুকে পড়ে রুশ ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া বাহিনী। ডনবাস সীমান্ত থেকে শুরু হওয়া সেই যুদ্ধ গড়িয়েছে কিয়েভ, খারকিভ, মারিউপোলের মতো শহরে। পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে ইউক্রেন সেনাও।
হামলা, পাল্টা হামলায় কেটেছে প্রায় সাড়ে তিন বছর। এখনও দুই দেশ কোনও সমঝোতায় পৌঁছোতে পারেনি। তবে শান্তির আলোচনার এই নতুন সম্ভাবনা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউরোপ ও গোটা বিশ্বের কাছে আশার আলো হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। এখন দেখার, পুতিন প্রশাসন ইউক্রেনের এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে কী বার্তা দেয়।
Advertisement



