পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আটক করা হচ্ছে। এর আগে ওড়িশায় ১৭ জন শ্রমিককে আটক করা হলে রাজ্য সরকার তাঁদের মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছিল। ওড়িশার পর এবার দিল্লিতেও আটক করা হয়েছে ৬ জন বাঙালি শ্রমিককে। গুজরাতেও, সুরাতে কাজ করতে যাওয়া বীরভূমের এক শ্রমিককে আটকে রাখে গুজরাত পুলিশ। ওড়িশার ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস মামলা দায়ের করা হয়েছে। দিল্লির ঘটনার পর সেটি নিয়ে একই মামলা দায়ের করা হয় মঙ্গলবার, ৮ জুলাই। দিল্লি ও ওড়িশার দু’টি ঘটনারই শুনানি হবে সম্ভবত আগামী শুক্রবার। এই বিষয়ে দ্রুত শুনানি যাতে হয় তা নিয়ে হাইকোর্টে আর্জি জানানো হয়েছে।
দিল্লিতে আটক শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন যে, ১৮ জুন দিল্লির রোহিনী পুলিশ জেলার কে. এন কাটজু থানা এলাকায় ছ’জন বাঙালি শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। এরপর শ্রমিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং পরিবারের লোকেদের জানানো হয় যে তাঁদের বাংলাদেশি সন্দেহ করে দিল্লি পুলিশ আটক করেছে। পরিবারের লোকেরা যেন দিল্লিতে এসে তাঁদের মুক্ত করেন। পরিবারের সদস্যরা দিল্লি পৌঁছলে তাঁদের বলা হয় যে, আটক শ্রমিকদের বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং ওই শ্রমিকদের পুশব্যাক করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর রাজ্যসভার সাংসদ এবং পশ্চিমবঙ্গ শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম জানিয়েছেন যে, এই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা হাইকোর্টে মামলা করবেন। যে ছ’জন শ্রমিককে দিল্লিতে আটক করা হয়েছিল তাঁরা বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা। দু’জন শ্রমিকের পরিবারের আইনজীবীরা জানিয়েছেন যে, এই শ্রমিকেরা কাজের উদ্দেশ্যেই গিয়েছিলেন দিল্লিতে, কিন্তু আটক হওয়ার পর তাঁদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, বা এখন তাঁরা কোথায় আছেন সেই ব্যাপারে কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
Advertisement
দিল্লির ঘটনার পর গুজরাতেও শেখ মোজাম্মেল নামের একজন বোলপুরের শ্রমিককে দীর্ঘ সময়ের জন্য আটক করে পুলিশ। এই শ্রমিকের পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে অবিলম্বে বীরভূম পুলিশের কাছে যান। মঙ্গলবার বিকেলে মুক্ত করা হয় এই শ্রমিককে। ওড়িশা, দিল্লি এবং গুজরাত সবই বিজেপি শাসিত এলাকা এবং এই জায়গাগুলিতেই যে বাঙালি শ্রমিকদের অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে এই বিষয়টি নিছকই কাকতালীয় নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
Advertisement
Advertisement



