এক বছরের মধ্যেই ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ মানালো মার্কুয়েজকে বিদায় নিতে হয়েছে। তার ফলে ভারতীয় দলের নতুন কোচ কে হবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। কিন্তু সারা ভারত ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, নতুন কোচের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে এবং বেশ কিছু শর্ত থাকবে, যা পূরণ করতে পারলে নতুন কোচ নির্ধারিত হবে ভারতীয় ফুটবল দলে। এই মর্মে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে নতুন কোচের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। বলা হয়েছে, কোচের পদে আবেদন জানানো ব্যক্তিকে ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল ও টেকনিক্যাল কমিটির কাছে রিপোর্ট করতে হবে। সেখানে দেখতে হবে ফুটবলারদের উন্নয়নে তার দক্ষতা কতদূর। পাশাপাশি, স্পোর্টস, সয়েন্স ও টেকনোলজি ব্যবহারে তিনি কতখানি দক্ষ, তাও পরীক্ষা করে দেখা হবে। অর্থাৎ আধুনিক ফুটবলের সব বিষয়গুলি তিনি জানেন কিনা, সেটা দেখে নেবেন কর্মকর্তারা। আসলে বিদায়ী কোচ মানোলোর সঙ্গে একাধিক বিষয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের। সেই কারণেই বিশেষ কিছু শর্ত আরোপ করা হচ্ছে।
এদিকে শোনা যাচ্ছে, কোচ হিসেবে কোনো ভারতীয় কোচের ওপর এবার আস্থা রাখতে চাইছেন ফেডারেশনের কর্তারা। সেক্ষেত্রে, অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন সঞ্জয় সেন এবং খালিদ জামিল। জানা যাচ্ছে, একটা পক্ষ বিশেষভাবে খালিদকে ভারতের কোচ হিসেবে চাইছেন। তার পিছনে প্রধান কারণ হলো, আই লিগ থেকে আইএসএল, উভয় ক্ষেত্রেই যথেষ্ট সফল তিনি। ভারতীয় ফুটবলকে হাতের তালুর মতন চেনেন খালিদ। তাঁর অধীনে আইএসএলে জামশেদপুর অন্যতম সফল একটা দল।
Advertisement
অন্যদিকে, আলোচনায় রয়েছেন সঞ্জয় সেনও। দীর্ঘ ৬ বছর পর তিনি বাংলাকে সন্তোষ ট্রফি জিতিয়েছেন। তাঁর আমলে মোহনবাগানকে আইলিগ চাম্পিয়ন হয়েছে, জিতেছে ফেডারেশন কাপ শিরোপাও। সবুজ-মেরুনের পাশাপাশি মহমেডান স্পোর্টিংকেও ফেডারেশন কাপ জিতিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে, মোহনবাগানের যুব দলের উন্নয়নের সঙ্গে বেশ কিছুদিন যুক্ত ছিলেন তিনি। পাশাপাশি, আইএসএলে সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। সম্প্রতি, এআইএফএফ এলিট কোর্স পাস করেছেন সঞ্জয়। ফলে, সবমিলিয়ে মানালো পরবর্তী জামানায় ভারতীয় কোচের দৌড়ে রয়েছেন বাংলার সঞ্জয় সেন। এই দুই স্বদেশী কোচ বাদে বিদেশি ফুটবলারদের নামও উঠে আসছে। এই মুহূর্তে অনেকেই ভারতের বিভিন্ন ক্লাবে কোচিং করিয়েছেন আইএসএল ফুটবলে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ইভান ডুকোমানোডিচ, অ্যাশলে ওয়েস্টউড, পার্ক হ্যাংসিও ও সার্জিও লোবেরা। কেরল ব্লাস্টার্সের সর্বকালের সেরা কোচ ইভান। প্রাক্তন ফুটবলার যুগোস্লাভিয়ার। অন্যদিকে অ্যাশলে ওয়েস্টউড আফগানিস্তানের প্রধান কোচ থাকাকালীন ভারতকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর তিনি হংকং জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
Advertisement
তাঁর কোচিংয়ে ভারত হংকংকের কাছে পরাস্ত হয়েছিল। এর আগে তিনি বেঙ্গালুরু এফসি’র প্রধান কোচ ছিলেন। ভিয়েতনাম ফুটবলে বিপ্লব এনেছিলেন পার্ক হ্যাংসিও। দক্ষিণ কোরিয়ার এই প্রাক্তন ফুটবলার ভিয়েতনামকে কোচিং করিয়ে প্রথমবারের মতো ২০১৮ সালে এশিয়ান গেমসে সেমিফাইনালে তুলেছিলেন। সার্জিও লোবেরা আইএসএল ফুটবলে রেকর্ড গড়েছিলেন প্রথম লিগ-শিল্ড ও কাপ জয়ের মধ্য দিয়ে। পরবর্তীতে তিনি ওড়িশা এফসি’র সঙ্গে যুক্ত হন। স্বাভাবিকভাবেই যদি বিদেশি কোচরা আগ্রহ প্রকাশ করেন, তাহলে স্বদেশী কোচদের মধ্যে সেইভাবে চোখে পড়ার মতো কাউকে পাওয়া যাবে না। তবে খালিদ জামিলকে যদি নির্বাচন করা হয়, তাহলে তিনি কখনওই কর্মকর্তাদের ইয়েসম্যান হবেন না।
Advertisement



