২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কাঁকুড়গাছিতে বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের খুনের মামলায় সিবিআই দু’দিন আগেই অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিয়েছে। সেই চার্জশিটে ১৮ জনের নাম রয়েছে। তার ভিত্তিতে সিবিআইকে ওই ১৮ জন সহ মূল চার্জশিটে যে ২০ জনের নাম রয়েছে, তাঁদেরও সমন পাঠাতে বলে আদালত। আদালতের এই নির্দেশের পরে সিবিআই আর্জি জানায়, সকলকে চার্জশিট পাঠাতে তাদের মাসখানেক সময় লাগবে। এরপরই সিবিআই-এর উপর ক্ষুব্ধ হয় আদালত। যে মামলার দু’বছর আগেই তথ্যপ্রমাণ জোগাড় হয়ে গিয়েছে, সেই মামলায় চার বছর পর কেন অতিরিক্ত চার্জশিট দেওয়া হল? সিবিআই-কে ধমক দিয়ে বিচারকের প্রশ্ন, এটা কি রসিকতা হচ্ছে?
বিচারপতি বলেন, ‘চার বছর পর সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিচ্ছেন। এটা কী “ম্যাটার অফ জোক?” চার বছর ধরে কী করছিলেন? চার্জশিটে তো দেখলাম তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করা হয়েছে দু’বছর আগে।’ বিচারকের সংযোজন, ‘তদন্তের অধিকার দেওয়া হয়েছে মানে সেটা আপনাদের খামখেয়ালির উপর নির্ভর করতে পারে না।’
Advertisement
বিচারকের এই নির্দেশের পর সিবিআই আদালতে জানায় যে, সকলকে চার্জশিট পাঠাতে তাদের মাসখানেক সময় লাগবে। এতেই ক্ষুব্ধ হন বিচারক। তিনি বলেন, ‘‘চার বছর পর সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিচ্ছেন। এটা কী ‘ম্যাটার অফ জোক?’ চার বছর ধরে কী করছিলেন? চার্জশিটে তো দেখলাম তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করা হয়েছে দু’বছর আগে।’’ বিচারকের সংযোজন, ‘‘তদন্তের অধিকার দেওয়া হয়েছে মানে সেটা আপনাদের খামখেয়ালির উপর নির্ভর করতে পারে না।’’
Advertisement
প্রসঙ্গত এই খুনের চার বছর পর অতিরিক্ত চার্জশিটে যে ১৮ জনের নাম রয়েছে,তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল এবং কলকাতা পুরসভার দুই কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার ও পাপিয়া ঘোষ। এই মামলায় শুক্রবার বিচারপতি ওই ১৮ জনকেই সমন পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি আদালতের পক্ষ থেকে চার্জশিটের প্রতিলিপিও পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এদিন আদালত শুনানির শুরুতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ভাবে পদক্ষেপ করা যেতে পারে, সে বিষয়ে সিবিআইয়ের মতামত জানতে চায় আদালত। সিবিআইয়ের আইনজীবী তার জবাবে আদালতকে জানান, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করতে পারে। বিচারক এর পরেই জানতে চান, এতদিনে এই ১৮ জনের মধ্যে কাউকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা হয়েছিল কি না। সেই প্রশ্নের জবাবে সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়ে দেন, ‘না, তা হয়নি।’ এরপরই বিচারক প্রশ্ন করেন, কাউকে গ্রেপ্তার করার দরকার ছিল কিনা? জবাবে ওই আধিকারিক বলেন ‘না। ওঁরা সহযোগিতা করছিলেন।’
এরপরই সিবিআইয়ের কাছে বিচারপতি জানতে চেয়েছিলেন, অভিযুক্তেরা পালাতে পারেন কি না। সেই প্রশ্নের জবাবে সিবিআই জানায়, তাদের সে রকম মনে হয়নি। তার ভিত্তিতে বিচারক জানান, তা হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রয়োজন নেই। এ কথা জানিয়ে আদালত অভিযুক্তদের সমন পাঠানোর নির্দেশ দেয়। শুধু ওই ১৮ জনই নন, মূল চার্জশিটে যে ২০ জনের নাম রয়েছে, তাঁদেরও সমন পাঠাতে বলে আদালত। কিন্তু সিবিআই সেই সমন পাঠাতে একমাস সময় চাইতেই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। তিনি জানিয়েছেন, মামলার পরবর্তী শুনানি ১৮ জুলাই। ওই দিনই অভিযুক্তদের আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হবে। সিবিআই সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
Advertisement



