মধ্যপ্রদেশের পর এবার হরিয়ানা। ফের ধরা পড়লেন এক ভুয়ো ডাক্তার। হরিয়ানার একটি হাসপাতালে তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অন্য এক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত অবশ্য নিজেও এক জন চিকিৎসক। তবে তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ নন বলেই জানতে পেরেছে পুলিশ।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ফরিদাবাদের বাদশাহ খান সিভিল হাসপাতালের হার্ট কেয়ার সেন্টারের। ‘ভুয়ো’ ওই চিকিৎসক সাধারণ চিকিৎসক হলেও নিজেকে ডিএনবি (কার্ডিওলজি) ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দিতেন। শুধু তা-ই নয়, গত ৮ মাস ধরে ৫০টিরও বেশি অস্ত্রোপচারও করেছেন তিনি।
Advertisement
শনিবার গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। যে চিকিৎসকের নাম ভাঁড়িয়ে চিকিৎসা করছিলেন অভিযুক্ত চিকিৎসক, সেই চিকিৎসককে বিষয়টি জানান এক রোগী। এরপর অভিযুক্ত চিকিৎসকের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন প্রতারিত চিকিৎসক। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে।
Advertisement
২০২৪-এর জুলাই থেকে ২০২৫-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করেছেন অভিযুক্ত। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই চিকিৎসক যাঁদের অস্ত্রোপচার করেছিলেন, তাঁদের অনেকেই নানা রকম সমস্যায় ভুগছেন। আবার কয়েক জন রোগীর মৃত্যুও হয়েছে।
মেদিটারিনা হাসপাতালের চেয়ারম্যান এবং বাদশাহ খান সিভিল হাসপাতালের হার্ট কেয়ার সেন্টারের প্রধান ডঃ এম প্রতাপ কুমার বলেন, ‘ওই চিকিৎসক আমাদের কাছে এমবিবিএস হিসেবে আবেদন করেন। তাঁর ডিএম (কার্ডিওলজি) ডিগ্রি নিয়ে আমাদের সন্দেহ জেগেছিল, তাই আমরা তদন্ত শুরু করি এবং পরে তাঁকে বরখাস্ত করি।’
সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারিতে অভিযুক্ত চিকিৎসককে ডিগ্রি জমা দিতে বলা হলে আচমকাই হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। বহু রোগী তখন খোঁজখবর শুরু করেন এবং ডাঃ পঙ্কজ মোহনের কাছে গিয়ে জানতে পারেন, তিনি কখনও ওই সেন্টারে কাজই করেননি। এরপর ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনে অভিযোগ দায়ের করেন প্রতারিত ডাক্তার পঙ্কজ মোহন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ভারতের জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের আসল কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ পঙ্কজ মোহনের রেজিস্ট্রেশন নম্বর (২৪৫৬) চুরি করে ব্যবহার করছিলেন। অথচ তাঁর নিজস্ব রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছিল ২৮৪৮২, যা শুধুমাত্র এমবিবিএস পর্যায়ের।
এর আগে মধ্যপ্রদেশেও ভুয়ো ডাক্তারের হদিশ মিলেছিল। মধ্যপ্রদেশের দামোহের একটি খ্রিস্টান মিশনারি হাসপাতালের ঘটনাটি ঘটে। ডাঃ জন ক্যামের ছদ্মবেশে নরেন্দ্র বিক্রমাদিত্য যাদব জানুয়ারি মাসে দামোহের মিশন হাসপাতালে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে কাজ করার দেড় মাসের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
Advertisement



