• facebook
  • twitter
Sunday, 14 December, 2025

জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে কিশোরের মৃত্যু

মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যু হয় আলিপুরদুয়ার শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দনগর এলাকার বাসিন্দা ঋতম কুণ্ডুর।

প্রতীকী ছবি।

জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল কিশোরের। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যু হয় আলিপুরদুয়ার শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দনগর এলাকার বাসিন্দা ঋতম কুণ্ডুর। এক মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিল ঋতম। এই মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

আলিপুরদুয়ার জেলা সদর হাসপাতালের সুপার ডাক্তার পরিতোষ মণ্ডল বলেন, ‘জ্বর না কমায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বাচ্চাটিকে রেফার করেছিলাম। এই রোগ মশার কামড় থেকেই হয়। শুয়োর এই রোগের ভাইরাস বহন করে। হয়তো ছোটবেলায় বাচ্চাটি জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের টিকা নেয়নি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’

Advertisement

ঋতম আলিপুরদুয়ার শহরের ম্যাকউইলিয়াম হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। বাবা রাজা কুণ্ডু এলাকাতেই পানের দোকান চালান। রাজা কুণ্ডু বলেম, ‘১৮ এপ্রিল ঋতমকে আলিপুরদুয়ার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জ্বর না কমায় ২০ এপ্রিল শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষানিরীক্ষার পর জানা যায়, ঋতমের জাপানি এনসেফ্যালাইটিস হয়েছে। ২৫ এপ্রিল ওকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করাই।’

Advertisement

মৃতের মা বলেন, ‘জ্বর ও গা ব্যথার কথা বলত ছেলে। তার পর ধীরে ধীরে অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করে। এরপর শরীরে হাত দিলেই বলত, আমার শরীরে ইঞ্জেকশন দেওয়া আছে। কখনও বলত, আমার কোমর ভেঙে যাবে। ও অনেক কষ্ট পেয়ে চলে গেল।’

জাপানি এনসেফ্যালাইটিস রোগের আঁতুড়ঘর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। তথ্য বলছে, প্রতি বছর এশিয়া মহাদেশে প্রায় প্রায় ১ লক্ষ মানুষ এই রোগের শিকার হয়ে থাকেন। যেখানে যেখানে ধান খেত রয়েছে, সেই সব এলাকায় এই রোগের প্রকোপ বেশি হয়। বর্ষাকালে ধানখেতে মশা ডিম পারে, বংশবিস্তার করে। সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে রোগও ছড়ায়। মূলত কিউলেক্স মশার কামড় থেকে এই রোগ ছড়ায়।

রক্তের মাধ্যমেই মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ডে প্রভাব বিস্তার করে এই রোগ। শিশুদের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনালে ব্যথা এবং বমি হয়। রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করলে ঘন ঘন জ্বর, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, খিঁচুনি, বিভ্রান্তি, কোমা এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যুও হতে পারে। জাপানি এনসেফ্যালাইটিস রোগের কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। কেবলমাত্র বাহ্যিক উপসর্গগুলি নির্মূল করার প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয় আক্রান্ত ব্যক্তিকে।

Advertisement