১০০ দিনের কাজে প্রায় ৭১ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন গুজরাতের মন্ত্রী বাচু খাবাড়ের পুত্র বলবন্তসিং খাবাড়। আর তারপরই বিজেপিকে তোপ দেগেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল। উল্লেখ্য, দুর্নীতির প্রশ্ন তুলে পশ্চিবমবঙ্গের ১০০ দিনের কাজের জন্য বরাদ্দ অর্থে কোপ পড়েছে কেন্দ্রের। এখন তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছে, ওই একই যুক্তিতে তাহলে বিজেপি শাসিত গুজরাতের জন্য বরাদ্দ অর্থও কি এবার কমবে?
গুজরাতে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এফআইআর দায়ের হয়েছিল গত ২৪ এপ্রিল। তাতে অভিযোগ করা হয়, ১০০ দিনের প্রকল্পে মন্ত্রী বাচু খাবাড়ের পুত্র বলবন্তের সংস্থা ১০০ দিনের প্রকল্পে সরঞ্জাম সরবরাহের কোনও বরাত পায়নি। তবুও জিনিসপত্র সরবরাহ করেছিল। এমনকি জিনিসপত্র পুরো সরবরাহের আগেই টাকাও মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রীপুত্রের সংস্থাকে। কুভা গ্রামের এক বাসিন্দা এই বিষয়টি প্রথমে জেলা প্রশাসনকে জানান। তারপরে পুলিশ সক্রিয় হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচজনকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এইবার গ্রেপ্তার হলেন মন্ত্রীপুত্র বলবন্তসিং খাবাড়।
Advertisement
এই ঘটনার উল্লেখ করে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সমাজমাধ্যমে লেখা হয়েছে, ‘গুজরাতের পঞ্চায়েত মন্ত্রী বাচু খাবাড়ের পুত্র ১০০ দিনের কাজে ৭১ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। কেন্দ্র কি বাংলার মতোই এবার গুজরাতের বরাদ্দ কাটছাঁট করবে? কেন্দ্রীয় দোল কি দুর্নীতির তদন্তে গুজরাটে যাবে, নাকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার রয়েছে বলে সব ধামাচাপা দেওয়া হবে?’
Advertisement
এই প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বিজেপিকে তোপ দেগে বলেছেন, ‘বিজেপি বলে না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা। অথচ তারা গরিবদের প্রাপ্য কেড়ে নেয়। এসবের পরেও গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী সবাই চুপ করে আছেন। এই সঙ্গে তৃণমূলের সাংসদ সায়নী ঘোষ মন্তব্য করেছেন, ‘ওরা বলে গুজরাত নাকি মডেল স্টেট। এদিকে গরিবের ৭১ কোটি টাকা লুট, মনে হয় এটাই ওদের মডেল।’
পশ্চিমবঙ্গের ১০০ দিনের কাজে বকেয়া টাকা চেয়ে বারবার সরব হয়েছে তৃণমূল। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে একাধিকবার এই রাজ্যের শাসকদলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কেন বকেয়া টাকা দেওয়া হচ্ছে না? কিন্তু কেন্দ্রের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের এই প্রকল্পে বিস্তর দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে। গত বাজেট অধিবেশনেও ১০০ দিনের কাজের বকেয়া চেয়ে সংসদে সরব হয়েছিল তৃণমূল। তখন তৃণমূল সাংসদদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তামিলনাড়ু ও কেরলের সাংসদরাও। তৃণমূল কেন্দ্রের অভিযোগ অস্বীকার করে বারবার বলেছে, এটা কেন্দ্রের প্রতিহিংসার রাজনীতি। তাঁদের কথা হল, যদি সত্যি কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকে, তবে তা কেন্দ্র খুঁজে বের করছে না কেন? কিন্তু তা না করে প্রকৃত উপভোক্তাদের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এই মর্মে সরব হয়েছে তৃণমূল।
এইবার গুজরাতের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর পুত্র বলবন্ত ১০০ দিনের কাজে ৭১ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলেছে যে, এবার তাহলে ১০০ দিনের কাজে গুজরাতের বরাদ্দ কি কমবে?
Advertisement



