সোমবার রাতে একটানা দু-তিন ঘণ্টা ধরে বৃষ্টি ও বজ্রপাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। তার সঙ্গে ছিল ঝড়ো হাওয়া। কোনও কোনও জায়গা থেকে ঘূর্ণিঝড়েরও খবর পাওয়া গেছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের ক্ষতির পাশাপাশি চাষিরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মঙ্গল ও বুধবার বিভিন্ন জায়গা থেকে যে সব রিপোর্ট পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে এবছর প্রথম এ ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন মানুষজন।
একটানা বৃষ্টি ও ঝড়ে শহর বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকায় বড়ো বড়ো গাছ ভেঙ্গে পড়ে। জাতীয় সড়কের একাধিক জায়গায় মঙ্গলবার সকালেও গাছ পড়ে থাকতে দেখা যায়। রাতে বৃষ্টি ছেড়ে যাবার পরও মানুষজন আটকে পড়েন বিভিন্ন এলাকায়। কারণ শহর পুরোপুরি জলের তলায় চলে যায়। বেশিরভাগ রাস্তায় কোমর সমান জল দাঁড়িয়ে যায়। বর্ধমানের বিসি রোড সহ রাজ্য ও জাতীয় সড়কের বেশিরভাগ অংশ জলে ডুবে যাওয়ায় দুর্ঘটনায় পড়েন অনেকেই। জেলার বিভিন্ন গ্রামে ঝড় জলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনও কৃষি প্রধান পূর্ব বর্ধমানে বেশ কয়েকটি ব্লকে বোরো ধান কাটার কাজ চলছে। ভারি বৃষ্টিতে ধান কাটার কাজ মঙ্গলবারও বন্ধ রাখতে হয়েছিল। বুধবার থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবার পর ধান কাটার কাজ শুরু হয়। কারণ জমিতে এক হাঁটু করে জল জমে আছে। ধান পুরোপুরি ঘরে তোলা সম্ভব নয় বলে দাবি চাষিদের।
Advertisement
তাঁরা জানিয়েছেন, বৃষ্টিতে সবজির জমিতেও ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে বেশ কিছু মাটির বাড়ি ভেঙ্গে গেছে বলে খবর মিলেছে। রায়না ব্লকে জোৎসাধি গ্রামে একটি বাড়িতে বাজ পড়ে আগুন লাগার ঘটনায় ওই পরিবার চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বাড়ির মালিক মহেন্দ্রকালী মজুমদার জানান, বাজের আগুনে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এমনকি বাড়িতে রাখা সামান্য টাকাও পুড়ে গেছে। সামান্য জমিতে চাষবাস করে সংসার চলে তাঁর। মন্তেশ্বর এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষতি হয়েছে বেশি। এখানকার মাঝের গ্রাম পঞ্চায়েতের সোনাগাছি বাঁকারপুল এলাকায় একটি বাড়ির ছাদ সম্পূর্ণ উড়ে যায়। বাড়ির মালিক নিয়ামত আলি সেখের পোল্ট্রি ফার্মেরও ক্ষতি হয়েছে। বেশ কিছু মুরগি মরে গেছে। পুরো ফার্ম তছনছ হয়ে গেছে। ওই গ্রামের আরো কয়েকটি বাড়ির ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই ব্লকের ভাগরা মূলগ্রামে একটি বাড়িতে ধানের মড়াই ভেঙে পড়ে রাস্তায়। সকলেই সরকারি সাহায্যের আবেদন করেছেন।
Advertisement
এব্যাপারে গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিপুল রায় মঙ্গলবার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, পুরো বিষয়টি তিনি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে জানাবেন যাতে ক্ষতিগ্রস্থরা সাহায্য পান। অন্যদিকে বরশুল-২ অঞ্চলের সুকান্তপল্লিতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এখানে একটি বাড়ির উঠানে বাজ পড়ে খড়ের পালুইয়ে আগুন ধরে যায়। পাড়ার লোকজন গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
Advertisement



