• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

নুর খানে ক্ষেপণাস্ত্র পড়তেই ফোন করে সংঘর্ষবিরতি চায় পাকিস্তান?

আকাশ থেকে মাটিতে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে নুর খান ঘাঁটিটিকে নিশানা করে ভারত। সেখানে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ফাইল চিত্র

ভারতীয় সেনা বাহিনীর প্রত্যাঘাতে পর্যুদস্ত হয়ে যুদ্ধবিরতি চায় পাকিস্তান। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাকিস্তানের বায়ুসেনা ঘাঁটিগুলি। তাদের একের পর এক সেনা ছাউনি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর পাক সেনাবাহিনীর বুকে কাঁপুনি শুরু হয়ে যায়। বিশেষ করে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ সংলগ্ন পাঞ্জাব প্রদেশের চাকলালার নুর খান ছাউনিতে হামলা হতেই সংঘর্ষবিরতিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন রাওয়ালপিন্ডির সেনাকর্তারা। সম্প্রতি এমনই জল্পনা ছড়িয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলে।

প্রসঙ্গত গত ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতেই পুনরায় আঘাত হানে পাকিস্তান। গত ৮ ও ৯ মে ভারতের একাধিক সেনা ঘাঁটি সহ বিভিন্ন শহরকে টার্গেট করে হামলা চালায় পাকিস্তানের বায়ুসেনা বিভাগ। এরপরই পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পাক হামলা প্রতিহত করে ভারতের বায়ুসেনা বিভাগও পাকিস্তানের একের পর এক সেনা ছাউনিতে আঘাত করে। ফলে পাকিস্তানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পাকিস্তানের রফিকি, মুরিদকে, চাকলালা এবং রহিম ইয়ার খান বায়ুসেনা ঘাঁটিতে আকাশপথে হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া নিশানা করা হয় সুক্কুর এবং চুনিয়ায় পাক সেনাঘাঁটি, পসরুর এবং সিয়ালকোটের বিমানঘাঁটি।

Advertisement

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে সেই ভিডিও ভাইরাল হয়। বিভিন্ন সেনা ছাউনিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। ১০ মে এ বিষয়ে বিবৃতি দেন ভারতীয় সেনার কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং।

Advertisement

জানা গিয়েছে, পাক বিমানবাহিনীর এই ঘাঁটিগুলির মধ্যে চাকলালার নুর খান ছাউনিটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একে পাক বায়ুসেনার সদর দপ্তর বললেও কম বলা হবে। কারণ পাক সেনা বাহিনীর অধিকাংশ বড় অপারেশনে মুখ্য ভূমিকা থাকে নুর খান সেনা ঘাঁটির। রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। এই ছাউনিটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর রাওয়ালপিন্ডির একেবারে গা ঘেঁষে গড়ে উঠেছে।

আরও চাঞ্চল্যকর খবর হল, এই ছাউনির এক পাশে নাকি রয়েছে ইসলামাবাদের পরমাণু অস্ত্র ভান্ডার। সেখানে আকাশ থেকে মাটিতে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে নুর খান ঘাঁটিটিকে নিশানা করে ভারত। সেখানে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কারণ পাক বিমানবাহিনীর লড়াকু জেটের বিরাট বহর রয়েছে নুর খান ঘাঁটিতে। মাঝ-আকাশের জ্বালানি সরবরাহের বিমানও এই ছাউনিতে রয়েছে। সংঘর্ষবিরতির পর সংশ্লিষ্ট ঘাঁটির উপগ্রহচিত্র প্রকাশ করে ভারতীয় বায়ুসেনা। সেখানে নুর খানের একাংশ উড়ে যাওয়ার স্পষ্ট ছবি লক্ষ্য করা যায়।

শুধু তাই নয়, বেনজির ভুট্টো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটিকে ঘিরে রেখেছে এটি। সংশ্লিষ্ট ছাউনির ভিতরে রয়েছে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ কলেজ। সেজন্য পাক সেনা বাহিনীর কাছে নুর খান সেনা ঘাঁটির গুরুত্ব অপরিসীম। আবার পাক বায়ুসেনার রসদ সরবরাহের প্রধান কেন্দ্র এই নুর খান বিমানঘাঁটি। এখানে সি-১৩০ হারকিউলিস এবং সিএন-২৩৫-এর মতো মালবাহী ফৌজি বিমান সারা বছর মোতায়েন থাকে। এখান থেকেই পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের রসদ ও সামরিক সরঞ্জাম এগুলির মাধ্যমেই সরবরাহ করে থাকে ইসলামাবাদের বিমানবাহিনী। সেখানে আঘাত হানায় পাক বায়ুসেনার কোমর কার্যত ভেঙে গিয়েছে। এমনটাই মনে করেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের একাংশ। এছাড়া ইসলামাবাদ ইতিমধ্যেই চিনের তৈরি দু’টি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান ধ্বংস হওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছে।

এদিকে আণবিক অস্ত্র নিয়ে পাকিস্তানের মনে যথেষ্ট ভয় রয়েছে। এমনটাই মার্কিন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন বলে সূত্রের খবর। ভারতের পশ্চিমের প্রতিবেশী দেশটি মনে করে যে কোনও দিন তাঁদের থেকে ওই হাতিয়ার ছিনিয়ে নিতে পারে দিল্লি। সেই কারণে নুর খানে হামলা হতেই তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। এরপরই ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতির বিষয়ে আলোচনা চালাতে থাকেন পাক ফৌজি জেনারেলরা।

সূত্রের খবর একের পর এক পাক বায়ুসেনার ছাউনি গুঁড়িয়ে দেওয়ায় চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। নুর খানে হামলা আটকাতে ব্যর্থ হওয়ায় রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদর দপ্তরও নিরাপদ নয়, তা স্পষ্ট বুঝে যান ইসলামাবাদের সেনা আধিকারিকরা। সে জন্য ১০ মে ভারতের ডিজিএমও-কে (ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন্‌স) ফোন করেন পাকিস্তানের ডিজিএমও। এরপরই যুদ্ধ বিরতিতে এগিয়ে আসে দুই দেশ। যদিও এব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তাঁর মধ্যস্থতায় দুই দেশ যুদ্ধ বিরতিতে রাজি হয়েছে।

অন্যদিকে পাকিস্তানের সরগোদা বায়ুসেনা ঘাঁটিতেও হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। এই ছাউনি সংলগ্ন কিরানা হিলসেও নাকি রয়েছে ইসলামাবাদের পরমাণু ভান্ডার। সেখানেও ভারতের বায়ুসেনা বিভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে সমাজমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে। যদিও তা খারিজ করে দিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। এ বিষয়ে ডিরেক্টর জেনারেল অফ এয়ার অপারেশন্‌স পদে থাকা এয়ার মার্শাল একে ভারতী বলেন, ‘কিরানা পাহাড় হোক বা অন্য কোনও জায়গা, পাকিস্তান যেখানেই পরমাণু হাতিয়ার রেখে থাকুক না কেন, সেখানে কোনও হামলা চালানো হয়নি। সেগুলো আমাদের লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ছিল না।’

Advertisement