অপারেশন সিঁদুর অভিযানে রাওয়ালপিন্ডি ও পঞ্জাব প্রদেশের দুটি বিমানঘাঁটি এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যে যুদ্ধবিরতির আর্জি জানাতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তান। এ কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পাকিস্তানের উপ–প্রধানমন্ত্রী ইসাক দার। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় এই মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর এই বক্তব্য থেকে ফের প্রমাণিত হল পাকিস্তানের তরফেই যুদ্ধবিরতির আর্জি জানানো হয়েছিল।
জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর অপারেশন সিঁদুর অভিযানের মাধ্যমে পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে ভারত। পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। টানা চারদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ চলে। এরপর দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। ভারতের দাবি ছিল, পাকিস্তানই প্রথম সংঘর্ষবিরতির আর্জি জানিয়েছিল। একাধিকবার সেই দাবি পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নিয়েছে পাকিস্তানও। এ দিন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসাক দার স্বীকার করে নিয়েছেন, বাধ্য হয়েই ভারতকে যুদ্ধবিরতির আর্জি জানাতে হয়েছিল পাকিস্তানকে। কারণ ভারতের হামলায় রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটি এবং পঞ্জাব প্রদেশের শরকোটের ‘পিএএফ ঘাঁটি রফিকি’ বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী আরও দাবি করেছেন, চলতি বছর ৬ মে রাত ২টো ৩০ নাগাদ নূর খান ও শরকোটের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। এরপরই ভারতের কাছে যুদ্ধবিরতির জন্য আবেদন জানাতে প্রথমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পরে সৌদি আরবের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছিল ইসলামাবাদ। হামলার ৪৫ মিনিটের মধ্যেই সৌদি প্রিন্স ইসাক দারকে ফোন করেছিলেন। তার আগে মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিওর সঙ্গেও ইসাকের কথা হয়। সৌদির প্রিন্স পাকিস্তানকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তিনি ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন কি না। ইসাক দার তাঁর প্রস্তাব মেনে নেন। কিছুক্ষণ পরে সৌদি প্রিন্স ফোন করে জানান, তিনি জয়শঙ্করকে পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন। ইসাকের এই স্বীকারক্তির পর ফের একবার পরিষ্কার হয়ে গেল যে পাকিস্তানই প্রথম যুদ্ধবিরতির আর্জি জানিয়েছিল। উল্লেখ্য, নূর খান বিমানঘাঁটি পাকিস্তানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি। এই বিমানঘাঁটিতে দিয়ে ভিআইপি পরিবহনও পরিচালিত হত।