গত প্রায় তিন দশক ধরে ভারতে পর্যায়ক্রমে জঙ্গি হামলা, নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে পাক সেনার গোলাগুলি নিয়ে অনেক ধৈর্য ও সহনশীলতা দেখিয়েছে ভারত। কিন্তু পহেলগাম কাণ্ডের জেরে সেই ধৈর্যের সমস্ত বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। পাকিস্তানকে বড় শিক্ষা দিতে চাইছে কেন্দ্র সরকার। ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এমন শিক্ষা দেওয়া হবে, যা সারা পৃথিবী মনে রাখবে। এরপরই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
ইতিমধ্যে ভারত সরকার সিন্ধু চুক্তি বাতিল সহ পাকিস্তানের উপর একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা আরোপের মধ্যে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ইসলামাবাদ। ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের আবহে তারা আতঙ্কিত। ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ইরানের প্রেসিডেন্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। ইরানও দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে, যাতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনোভাবে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি না হয়। ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় দুই দেশের রাষ্ট্র প্রধানের সঙ্গে কথা হয়েছে।
Advertisement
প্রসঙ্গত গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে নিরীহ পর্যটকদের উপর জঙ্গিদের নৃশংস হত্যালীলা চালানোর পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার নিয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দুই দেশই একে অন্যের বিরুদ্ধে মৌখিক আক্রমণ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ভারত ঝিলম নদীর জল ছাড়ার ফলে পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে সূত্রের খবর। মোদী সরকার সমস্ত পাকিস্তানিদের ভারত ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের এই কূটনৈতিক সঙ্কট যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কোনদিকে গড়ায়, সেদিকে নজর রাখছে পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলি। এই পরিস্থিতিতে ইরানি প্রেসিডেন্টকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে শাহবাজ শরীফ। দুই দেশের উত্তেজনা প্রশমনে ইরানের মধ্যস্থতাকে স্বাগত জানিয়েছেন বর্তমান পাক প্রধানমন্ত্রী।
Advertisement
এদিকে শাহবাজ় দাবি করেছেন, পহেলগামে জঙ্গি হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনও যোগ নেই। শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজ়েশকিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপের সময় তিনি আবারও একই দাবি করেছেন। শাহবাজ জানান, পাকিস্তান সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করে। তবে পাকিস্তান ইরানকে পাশে পেলেও নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ দ্বন্দ্বে মধ্যস্থতার কোনও আকাঙ্ক্ষা নেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। বরং তিনি সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। ট্রাম্প মনে করেন, ভারত ও পাকিস্তান নিজেরাই কোনও না কোনও ভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে।
Advertisement



