চলতি আইপিএল ক্রিকেটে কলকাতা নাইটরাইডার্সের সেই মারমুখী খেলা চেখে পড়ছে না। ইতিমধ্যেই কলকাতা আটটি ম্যাচ খেলে ফেলেছে। তার মধ্যে মাত্র তিনটি ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেছে দল। স্বাভাবিকভাবেই যে প্রত্যাশা নিয়ে কলকাতা দলের খেলা দেখার জন্য ইডেন উদ্যানে দর্শকরা ছুটে আসেন, সেই খেলা দেখে হতাশ হয়ে তাঁরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। প্রথম ম্যাচেই বেঙ্গালুরুর কাছে ইডেন উদ্যানে হেরেছে কলকাতা। তেমনই আবার গত ম্যাচে শুভমন গিলদের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জয়ের মুখ দেখতে পায়নি অজিঙ্কা রাহানেরা। তবুও অজিঙ্কা রাহানে ব্রিগেড শনিবার ইডেন উদ্যানে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মাঠে নামছে। জয়ের জন্য অবশ্যই রিঙ্কু সিংরা ঝাঁপাবেন, সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু নিজেদের খেলা খেলতে না পারলে সমস্ত আশা বৃথা হয়ে যাবে। এখানে পাঞ্জাবের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নামবেন কলকাতার বিরুদ্ধে। আসলে গত বছর কলকাতা দলের সফল অধিনায়ক হিসেবে ট্রফি জিতেছিলেন শ্রেয়স আইয়ার। কিন্তু শ্রেয়সকে মেগা নিলামে কলকাতা রাখেনি। তাই শ্রেয়সের ভূমিকা কলকাতার বিরুদ্ধে একেবারে অন্যরকম হবে। শ্রেয়স নিজেও কৌশলগতভাবে দলকে পরিচালনা করবেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। প্রথম লেগের খেলায় শ্রেয়স আইয়ারদের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে কলকাতা দল লজ্জার হারের শিকার হয়েছিল। পাঞ্জাব দল মাত্র ১১২ রান করেছিল। তার জবাবে কলকাতা দল ৯৫ রান করে হার স্বীকার করে। তাহলে কি ইডেন উদ্যানে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে পারবে অজিঙ্কা রাহানেরা?
শুক্রবার দুই দলের অনুশীলনে প্রায় সবাইকে দেখা গেল নেটে দারুণ সিরিয়াস। কলকাতা নাইটরাইডার্স দলে উমরান মালিককে বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সেইভাবে এখনও ছন্দে না থাকলেও হয়তো আবার সুযোগ দেওয়া হবে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য। জম্মু-কাশ্মীরের এই পেসার গত বছর দারুণ চমক দিয়েছিলেন। কিন্তু এবারে সেই জায়গায় তিনি পৌঁছতেই পারেননি চোটের কারণে। তাঁর জায়গায় চেতন শাকারিয়াকে নিয়ে আসা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে তাঁকে প্রথম একাদশেই রাখা হবে। অন্যদিকে পাঞ্জাবের অধিনায়ক এবারে আইপিএল ক্রিকেটে দারুণ ফর্মে রয়েছেন। আটটি ম্যাচে ২৬৩ রান করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে তিনটি অর্ধ শতরান। আর একটি ম্যাচে মাত্র তিন রানের জন্য তিনি শতরান পাননি। আবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে শ্রেয়স আইয়ারের ব্যাট থেকে এসেছে ৮২ রান। সেই কারণে কলকাতার বিরুদ্ধে তিনি যে দারুণ ফর্মে রয়েছেন, তা নতুন করে বলার জায়গা নেই।
Advertisement
অন্যদিকে কলকাতা শিবিরে আন্দ্রে রাসেলকে নিয়েও বেশ চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলে ও ব্যাটিংয়ে সেইভাবে কোনও কিছুই করতে পারছেন না। পাশাপাশি, রিঙ্কু সিং ও ভেঙ্কটেশ আইয়ারকেও সেই মেজাজে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। হয়তো মইন আলিকে একবার দেখে নেওয়া হবে। তবে ইডেন খেলতে পারেন অনরিখ নখিয়া। নখিয়া তাঁর গতিকে কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করতে পারেন। তিনি বেশ কিছুক্ষণ নেটে প্র্যাকটিস করলেন। বরুণ চক্রবর্তী ও সুনীল নারাইনরা দলের মেরুদণ্ড হলেও জয় পাওয়াটা কঠিন হয়ে পড়ছে দলে। পিচ নিয়ে বিতর্ক থেকেই যাচ্ছে। একই পিচেই অন্য দলের ক্রিকেটাররা খেলছেন। তাঁদের কাছে যদি সমস্যা না হয়, তাহলে ঘরের মাঠ বলে পিচ নিয়ে বিতর্ক তৈরি করারকোনও কারণ নেই। বর্তমানে শ্রেয়স আইয়ার যেভাবে দলকে পরিচালনা করছেন, তা অবশ্যই প্রশংসা করার মতো। দলে বেশ কয়েকজন ভালো ব্যাটসম্যান যেমন রয়েছেন, তেমনই বোলাররাও চেষ্টা করছেন তাড়াতাড়ি উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের পথে এগিয়ে যাওয়া। কলকাতার কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ আলাপচারিতা করতে দেখা গিয়েছে, তেমনই আবার দলের অন্যতম ভরসা হর্ষিত রানাকে নিয়ে পাঞ্জাবের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটালেন। এখন দেখার বিষয় দুই দলের অধিনায়কের মগজাস্ত্র কী কথা বলে শনিবার ইডেন উদ্যানে।
Advertisement
Advertisement



