এক ‘আদিল’ যখন ২২ এপ্রিল পহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় সাধারণ পর্যটকদের উপর হামলা রুখতে গিয়ে জঙ্গীদের হাতে প্রাণ দিয়েছে, তখনই খোঁজ মিলল অন্য এক ‘আদিল’এর, যে নাকি এই হামলায় সন্ত্রাসবাদীদের সাহায্য করেছিল। মনে করা হচ্ছে সেদিন উপত্যকায় নির্বিচারে পর্যটকদের হত্যা করতে সাহায্য করেছিল পহেলগামের অনন্তনাগ জেলারই বাসিন্দা আদিল ঠোকর। এই আদিলের সাহায্যেই নিখুঁতভাবে হত্যার পরিকল্পনা করে জঙ্গিরা। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, জঙ্গিরা দীর্ঘদিন ধরেই হামলার ছক কষেছিল। আদিল ঠোকর জঙ্গিদের গাইড হিসেবে কাজ করেছে। অনন্তনাগ জেলারই বাসিন্দা হওয়ায় গোটা এলাকার মানচিত্র তার কাছে হাতের তালুর মত চেনা। মনে করা হচ্ছে, সে-ই বাকিদের পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল বৈসরনে।
একাধিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী আদিল ঠোকর ওরফে আদিল গুরি ২০১৮ সালে আটারি -ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে গিয়েছিল। সেখানে সে লস্করের সদস্য হয়। জঙ্গি প্রশিক্ষণও নেয়। গত বছরেই সে আবার জম্মু-কাশ্মীরে ফিরে আসে। পাকিস্তান থেকে ফিরে আসার পর আদিলকে একাধিকবার দক্ষিণ কাশ্মীরে দেখা গিয়েছে। বর্তমানে সে অনন্তনাগেই রয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান হামলার ছক কষতে আদিলের দেওয়া তথ্যের উপর গুরুত্ব দিয়েছিল হামলাকারীরা। সন্দেহ, বৈসরনের এক ধারে ঘন পাইনের জঙ্গলে অপেক্ষা করেছিল জঙ্গিরা। সূত্রের দাবি, জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা এবং হামলা চালিয়ে সহজে পালিয়ে যাওয়ার জন্য ওই জঙ্গলকে ব্যবহার করতে সাহায্য করেছে গাইড তথা জঙ্গি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আদিলই। ঘন পাইন বনে পাক জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে হামলার আগে এলাকা পরিদর্শন করা, সব কিছুরই ব্যবস্থা করা হয়েছিল তার মাধ্যমে। হামলার পর জঙ্গলের কোন রাস্তা ধরে সহজে চম্পট দেওয়া সম্ভব হবে, তারও নীলনক্সা তৈরি করেছিল আদিলই।
উল্লেখ্য, এই অনন্তনাগেরই আরও এক বাসিন্দা আদিল। তাঁর পুরো নাম সইদ আদিল হুসেন শাহ। ২২ এপ্রিল পর্যটকদের উপর হামলা ঠেকাতে তিনি রুখে দাঁড়িয়েছিলেন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে।কিন্তু তাঁর শরীর গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় জঙ্গীরা। আদিল পর্যটকদের ঘোড়ায় চড়িয়ে অর্থ উপার্জন করতেন। যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ছিলেন এই ঘোড়াচালক আদিলও।
Advertisement