বিধায়কদের চশমা বানানোর খরচে লাগাম টানল বিধানসভার সচিবালয়। ঠিক হয়েছে, বিধায়কদের চশমার দাম সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা হতে পারে। হাসপাতালের বেডভাড়াও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, বিধায়কদের হাসপাতালে বেডভাড়া দৈনিক ৮ হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। বিধানসভা অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিধায়করা এখন থেকে চিকিৎসার জন্য দৈনিক সর্বাধিক ৮ হাজার টাকা মূল্যের বেড ভাড়া এবং চশমার জন্য সর্বাধিক ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল করতে পারবেন। চিকিৎসা খরচ বাবদ যেসব মোটা টাকার বিল আসবে, সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
দিনকয়েক আগে মুর্শিদাবাদ জেলার এক তৃণমূল বিধায়ক চশমা বানানোর বিল স্পিকারের টেবিলে পেশ করেন। ঘটনাচক্রে সেই সময় সেখানে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানতে চান, কত টাকার বিল এসেছে। বিলের অঙ্ক শুনে হতবাক হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। বিধায়কদের মেডিক্যাল বিল নিয়ে স্পিকারের সঙ্গে জরুরি আলোচনা সারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেই চশমার খরচ ও হাসপাতালের বেড ভাড়া বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
Advertisement
প্রসঙ্গত, বিধানসভার সদস্যদের চিকিৎসার খরচ বহন করে বিধানসভার সচিবালয়। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায়, বিধায়করা মোটা অঙ্কের বিল জমা দিয়েছেন। কোনও মেডিক্যাল বিলে ‘অসঙ্গতি’ বা ‘অত্যধিক’ খরচ দেখা গেলে, তা স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোচরে আনা হয়। এক্ষেত্রে তেমনই একটি বিল স্পিকারের কাছে এসেছিল। সেই বিলের অঙ্ক শুনেই স্তম্ভিত হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী।
Advertisement
বিধানসভার সচিবালয় সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ জেলার ওই প্রবীণ বিধায়ককে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনবার তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছে তিনি। তবে চশমা আর বেডের বিষয়ে বিধানসভা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিলেও মুর্শিদাবাদের ওই বিধায়কের সংশ্লিষ্ট বিলটি পুরোপুরি খতিয়ে দেখার পরই সিদ্ধান্ত নেবেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘আমি সবটা পরীক্ষা করে, দেখে তারপরই সিদ্ধান্ত নেব।’
চশমার বিল নিয়ে বিতর্ক অবশ্য তৃণমূল আমলে নতুন নয়। মমতার নেতৃত্বাধীন প্রথম সরকারের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ৯৯ হাজার ৮৮০ টাকার একটি মেডিক্যাল বিল জমা দিয়েছিলেন। তার মধ্যে দুটি চশমার মূল্য ছিল ৭০ হাজার টাকা। পার্ক স্ট্রিটের একটি দোকান থেকে দু’টি চশমা তৈরি করান তিনি। বিতর্কের মুখে অবশ্য সেই বিল প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন সাবিত্রী। বাম আমলেও চশমার বিল নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন মানব মুখোপাধ্যায়। তিনি ৩০ হাজার টাকার বিল জমা দিলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেন।
Advertisement



