১৯৮৬ সালের গঙ্গা জলবন্টন চুক্তি নিয়ে ভারতকে পাশে পেতে চাইছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কটে বাংলাদেশের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এই বৈঠকে দুই দেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। গত রবিবার অষ্টম ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন আয়োজিত হয়। ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জয়শঙ্কর এবং তৌহিদ।তৌহিদ হোসেন গঙ্গার জল বন্টনে চুক্তি পুনর্নবীকরণের আলোচনা শুরুর উপর জোর দিয়েছেন। তিনি সার্ক স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক আয়োজনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি বিবেচনার জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়া এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেন। সেই চুক্তি মতো ৩০ বছরের জল বন্টনের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পায়। সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালে। গত বছরে হাসিনা সরকার গদিচ্যুত হওয়ার আগে, দিল্লি সফরে এসে প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন তিনি। সেখানে ‘ফরাক্কা-গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি’ নবীকরণের জন্য ‘যৌথ কারিগরি কমিটি’ তৈরি করা হয়। তবে এখন বাংলাদেশে হাসিনার সরকারের পতন হয়েছে। গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকাৈলীন সরকার। যেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্য তিক্ততা তৈরি হয়েছে। সেই আবহে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার ফের ভারত সরকারকে গঙ্গার জলবন্টন চুক্তি নবীকরণ নিয়ে অনুরোধ জানাতে চায়। দক্ষিণ এশীয় দেশগুলির আন্তর্জাতিক মঞ্চ ‘সার্ক’কে পুনরুজ্জীবিত করতেও ভারতকে পাশে চায় তারা।
Advertisement
গত রবিবার অষ্টম ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনে জয়শঙ্কর এবং তৌহিদের দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দু’জনের ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানান, আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই বৈঠকে বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলির আন্তর্জাতিক মঞ্চ ‘বিমসটেক’ নিয়েও আলোচনা হয়।
Advertisement
এই বৈঠকের বাংলাদেশের বি’দেশ মন্ত্রক থেকেও একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। ঢাকার সেই বিবৃতিতে জানানো হয়, ১৯৯৬ সালের গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তির নবীকরণ নিয়ে আগামী দিনে আলোচনা হবে এমন কথা বলেছেন তৌহিদ। পাশাপাশি সার্কের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক ডাকা নিয়েও নয়াদিল্লিকে পাশে চাইছে ঢাকা।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ, ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলার প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত। ইউনূসের প্রশাসনও বুঝিয়ে দেয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের নাক গলানো তাদের পছন্দ নয়। তবে সাম্প্রতিক অশান্তির পরিবেশেও বাংলাদেশ ও ভারত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক করেন। উভয় দেশের প্রশাসনের তরফেই জানিয়ে দেোয়া হয়েছএ, দুই দেশই সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে আগ্রহী।
Advertisement



