• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

৮ম বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ৩০টির বেশি দেশের প্রতিনিধিরা

৩০টির বেশি দেশের শিল্প-বাণিজ্য প্রতিনিধিরা যোগদান করতে কলকাতায় আসছেন

ফাইল চিত্র

শ্রীধর মিত্র

আগামী মাসের ৫-৬ তারিখে দু-দিনের অষ্টম বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন রাজারহাট-নিউটাউনের বিশ্ব বঙ্গ কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছরের ন্যায় এবছরেও হাজির থাকতে পারেন বিশিষ্ট শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি সহ ৩০টি শিল্পগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা। ২০২৩ সালে সপ্তম বাণিজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল রাজারহাট-নিউটাউনের বিশ্ব বঙ্গ কনভেনশন সেন্টারে। সেই সম্মেলনের থেকে ৩ লাখ ৭৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছিল বঙ্গ সরকার। রিলায়েন্স-আদানি-নিরাথন্দানি সহ অন্যান্য শিল্প গোষ্ঠীর কাছ থেকে। গত সাতটি বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে আনুমানিক ২০ হাজার কোটি টাকার মতন বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছিল বঙ্গ। যার বেশির ভাগই বাস্তবায়িত হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। এ বছর অর্থাৎ আগামী মাসের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় দু-দিনের সম্মেলনে বড় শিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বিনিয়োগ করাই বঙ্গ সরকারের লক্ষ্য ও বিশেষ গুর্তব দিতে চাইছে।

Advertisement

আসন্ন অষ্টম বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ৩০টির বেশি দেশের শিল্প-বাণিজ্য প্রতিনিধিরা যোগদান করতে কলকাতায় আসছেন। উক্ত সম্মেলনে বঙ্গের ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প, পর্যটন শিল্প। চামড়া শিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অহ্বান জানাচ্ছেন শিল্প প্রতিনিধিদের কাছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ডেটা সেন্টারের অসন্ন বিশ্ববঙ্গ-বাণিজ্য সম্মেলনে বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে বঙ্গ সরকার। এ ছাড়াও উন্নত উৎপাদন শিল্প, প্রতিরক্ষা উৎপাদন, কৃষি সংক্রান্ত শিল্প, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো, বিদ্যুৎ ও সৃজনশীল অর্থনীতিতে বঙ্গে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হবে আগত শিল্পবাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে। এর পাশাপাশি চলচিত্র শিল্প ও পর্যটন শিল্পে আরও লগ্নী টানতে ও তৎপর বঙ্গ সরকার।

Advertisement

সপ্তম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে পরবর্তী তিন বছরে ২০ হাজার কোটি টাকার লগ্নির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রিলায়েন্স গ্রুপের কর্ণধার মুকেশ আম্বানী। ওইখানেই ঘোষণা করেছিলেন, সেই মতো ৫১ পীঠের অন্যতম সতীপীঠ কালীঘাটের কালীমন্দিরের সংস্কারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা। সেই দিক থেকে এবারের বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনেও তাঁর থেকে উল্লেখযোগ্য লগ্নির প্রতিশ্রুতি প্রত্যাশা করছে বঙ্গ। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি রিলায়েন্স গোষ্ঠীর নীতা আম্বানির সংস্থা আইএসএস ১৯ জন কর্মী মন্দিরের সংস্কারের জন্য ২৫ কোটি টাকা মঞ্জুর করে নিজস্ব ঠিকাদারি সংস্থা মারফত মন্দিরের ভেতরের বিভিন্ন অংশ মায়ের গর্ভগৃহ, ভোগঘর, নাটমন্দির, মন্দির সংলগ্ন কুণ্ডুপুকুর সহ মন্দিরের পাঁচটি প্রবেশ পথের দরজা, বলিদানের অংশ, চারটি শিব মন্দির, হোমকুণ্ডু আমূল সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছিল, এছাড়াও মন্দিরের চূড়ায় ৫০ ভরি সোনা দিয়ে নতুন করে এবং ভেতরে রকমারি আলোর সু-বন্দোবস্তো করে দিয়েছে। এখন অনেক কাজ চলছে। কাজের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন সকাল থেকে মন্দিরের ভেতরের অংশ ধোয়া-মোছার জন্য স্থায়িভাবে নিজস্ব পেশাদারি কর্মীদের দিয়ে সাফসুফো আরম্ভ করে দিয়েছে গত মাস তিনেক থেকে।

এছাড়াও কুণ্ডুপুকুরের আমূল সংস্কার করে রং-বেরংয়ের আলোয় সাজিয়ে বাহরী ফুলের বাগান করে দিয়েছে শোভা বর্ধনের জন্য। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে যে, আগামী মাসের ৫-৬ তারিখে কলকাতায় বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন এলে মন্দিরের সংস্কারের কাজ তদারকি করতে স্বয়ং রিলায়েন্স কর্ণধার মুকেশ আম্বানী-নীতা আম্বানী সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা কালীঘাটে আসতে পারেন। এ বছরে অষ্টম বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দিতে আসতে পারেন আইটিসির কর্তা সঞ্জীব পুরী, হিরানন্দনী গোষ্ঠীর কর্ণধার নীরঞ্জন হিবনপুনী, গ্লোবাল ফাউনড্রিজের সহ-সভাপতি অভিজিৎ দাস, ডালমিয়া গোষ্ঠীর পুনীত ডালমিয়া এবং বাংলার শিল্পপতিরা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বণিকসভার প্রতিনিধি-রাষ্ট্রদূতেরাও, আদানি গোষ্ঠীর তরফে কোনও প্রতিনিধি যোগ দেবেন কিনা, সে ব্যাপারে সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। উপস্থিত বাণিজ্য সম্মেলনে প্রতিনিধিরা তাদের মতামত জানাবেন মঞ্চে। ইতিমধ্যেই তারা জানিয়েছেন বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ করে তারাও খুব সন্তুষ্ট, আগামী দিনে তারা বঙ্গে আরও শিল্পে বিনিয়োগ করতে চায়। এই সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ড. অমিত মিত্র সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের মন্ত্রীরা, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও অন্যান্য সচিবরাও বিশিষ্ট অতিথিরা।

Advertisement