আমেরিকায় রূপান্তরকামীদের আর কোনও স্থান রইল না। এবার থেকে সরকারিভাবে শুধুমাত্র পুরুষ ও স্ত্রী লিঙ্গকে স্বীকৃতি দেবে ট্রাম্প সরকার। সোমবার ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নিয়েই সরকারি নীতি স্পষ্ট করে একথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প জানান, শীঘ্রই তিনি এ বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশও জারি করবেন।
নয়া প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরই ট্রাম্প এলজিবিটিকিউ সমতার সব আদেশ বাতিল করেছেন। দুটি লিঙ্গে স্বীকৃতি দিয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছেন তিনি এব্ং জো বাইডেনের আমলের সরকারি কর্মসূচীর সমাপ্তিও ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এখন থেকে আমেরিকার সরকারি নীতি অনুসারে শুধুমাত্র দু’টি লিঙ্গ থাকবে— পুরুষ এবং মহিলা।’
ট্রাম্প সমস্ত সরকারি নথিপত্রে শুধু দুটি লিঙ্গের বিকল্প দেওয়ার কথা বলেছেন। সেই আদেশ অনুসারে পাসপোর্ট, ভিসা এবং অন্য সব সরকারি নথিপত্রে ‘পুরুষ’ এবং ‘মহিলা’— এই দুটি লিঙ্গেরই উল্লেখ থাকবে। নির্দেশ অনুসারে, শারীরিক গঠনের দিক থেকে যে মানুষ যে লিঙ্গের, সেটিরই উল্লেখ থাকবে সরকারি নীতিতে। কোনও পুরুষ নিজেকে মহিলা মনে করতে পারেন, বা কোনও মহিলা নিজেকে পুরুষ মনে করতে পারেন, সরকারি নথির ক্ষেত্রে এই ধারণা থেকে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে বেরিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে।
রূপান্তরকামীদের জন্য সরকারি নথিতে পৃথক লিঙ্গের ব্যবস্থা নিয়ে নীতি চালু করেছিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চার বছর আগে ওভাল অফিসের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিনই এই নীতি চালু করেছিলেন বাইডেন। ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসতেই ওই নীতি বদলাতে উদ্যোগী হন।
ট্রাম্পের এই নতুন নীতি ঘোষণার পরই প্রতিবাদে সরব হয়েছে আমেরিকার বিভিন্ন মানবাধিকার এবং রূপান্তরকামীদের অধিকার সংক্রান্ত সংগঠনগুলি। এলজিবিটিকিউ অধিকারের জন্য সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু নিউইয়র্ক সিটির ঐতিহাসিক স্টোনওয়াল ইনের বাইরে প্রতিবাদ দেখান সংগঠনের সদস্যরা। আমেরিকায় রূপান্তরকামীদের অধিকার সংক্রান্ত সবচেয়ে বড় সংগঠন ‘হিউম্যান রাইট্স ক্যাম্পেন’-এর সভাপতি কেলি রবিনসন বলেছেন, ‘আমরা পিছু হটছি না। ভয়ও পাচ্ছি না। আমরা কোথাও পালিয়ে যাচ্ছি না। আমরা নিজেদের সর্বশক্তি দিয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াই করব।’
২২ বছর বয়সের রূপান্তরকামী ছাত্র অ্যাঞ্জেল বুলার্ড সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ‘এই ঘোষণা এবং নীতি পরিবর্তন গভীরভাবে মানুষকে প্রভাবিত করবে। যখন আপনাকে এই পৃথিবীতে স্বীকৃতি দেওয়া হয় নাএবং আপনি একা হয়ে পড়েন তখন এটি একটি ভয়ঙ্কর জায়গা।’
টলেডো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির অধ্যাপক এবং এলজিবিটিকিউ নীতির বিশেষজ্ঞ জামি টেলর সতর্ক করেছেন লিঙ্গ নিশ্চিতকরণের নীতি পরিবর্তনের ফলে চিকিৎসা পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটতে পারে।