ইস্টবেঙ্গল শিবিরে একের পর এক সমস্যা দেখা দেওয়ায় কিছুতেই আইএলএল ফুটবলে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভব হচ্ছে না। একদিকে কার্ডের সমস্যা, আর অন্যদিকে একের পর এক চোটের ঘটনায় খেলোয়াড়রা মাঠের বাইরে রয়েছেন। এই অবস্থায় কোচ অস্কার ব্রুজো কীভাবে জেতার লক্ষ্যে পৌঁছবেন, তা নিয়ে খুবই চিন্তিত। তবুও তিনি কোনওভাবেই আশা ছাড়তে রাজি নন। তাই মঙ্গলবার ঘরের মাঠে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে জেতার রাস্তায় ফিরে আসতে চাইছেন। কোচ মনে করেন, জেতার জন্য যেভাবে ফুটবল রণক্ষেত্রে যুদ্ধ করতে হয়, তা খেলোয়াড়দের মানসিকতায় টগবগ করে ফুটছে।
গত ম্যাচে ঘরের মাঠে ওড়িশা এফসি’র কাছে হেরে গেলেও দল কিন্তু ভেঙে পড়েনি। আত্মবিশ্বাসেও কোথাও চির ধরেনি। রেফারির ভুল সিদ্ধান্তে ইস্টবেঙ্গলকে প্রথম পর্বের শেষের দিক থেকে পুরো খেলাটাতেই ১০ জনে খেলতে হয়েছে। সেই সময় গোল করার মতো সুযোগও তৈরি করে ফেলেছিল। কিন্তু যে কারণেই হোক গোল আসেনি। এই মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গলকে ঘরের মাঠে দুটো ম্যাচেই জেতার লক্ষ্যে ঝাঁপাতে হবে। হয়তো কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে। কিন্তু প্রতিপক্ষ দলকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়া চলবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছেন লাল-হলুদ শিবিরের কোচ অস্কার ব্রুজো। তিনি বলেছেন, ঐক্যবদ্ধভাবে এই পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করতে হবে। আর সুযোগ পেলে গোল করে দলকে এগিয়ে রাখতে হবে।
Advertisement
ওড়িশা ম্যাচে দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় জিকসন সিং লাল কার্ড যেমন দেখেছেন তেমনই আবার মাদিহ তালাল চোট পেয়ে দল থেকে ছিটকে গেছেন। কোনওভাবেই পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে তাঁর নামার সম্ভাবনা নেই। তাই কৌশল করেই দলকে খেলতে হবে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে। হয়তো ডিফেন্ডার আনোয়ার আলিকে মাঝমাঠে নিয়ে আসা হবে। তাঁকে ব্লকার হিসাবে খেলতে হবে। তাঁর পাশে থাকবেন বাংলার ভূমিপুত্র সৌভিক চক্রবর্তী। তবে দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসের চোট আগে থেকে কিছুটা ভালো জায়গায় রয়েছে। পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে না থাকলেও রিজার্ভ বেঞ্চে তিনি থাকবেন। প্রয়োজন হলে তিনি মাঠে নামবেন। সবই নির্ভর করবে পরিস্থিতির উপর।
Advertisement
দলের মধ্যে নানা সমস্যা রয়েছে। সময়টা ভালো যাচ্ছে না ইস্টবেঙ্গলের। তবুও খেলোয়াড়দের ইতিবাচক থাকতে হবে। পাঞ্জাব বেশ ভালো ফর্মেই রয়েছে। সেই কারণেই অঙ্ক কষে খেলার প্রয়োজন রয়েছে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে। কখনও রক্ষণাত্মক, আবার কখনও আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়ে পুরো দলটাকে খেলতে হবে। তা না হলে পাঞ্জাবের মতো দলকে চাপে রাখা কঠিন হয়ে যাবে। ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা অবশ্যই মাঠে গিয়ে খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করবেন এবং জয় দেখার জন্য মাঠে চিৎকার করবেন। এটাই হয়তো ইস্টবেঙ্গলের কাছে বড় হাতিয়ার হবে। পাঞ্জাব দলকে কখনওই ছোট করে দেখার কোনও জায়গা নেই। ধারাবাহিকভাবে তারা ভালো খেলছে। সব বিভাগেই শক্তিশালী। তারা যে কোনও দলের বিরুদ্ধে জেতার ক্ষমতা রাখে। সেই কারণেই মাঠের মধ্যে লড়াইকে সম্মান জানিয়ে আসল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার কথা লাল-হলুদ শিবিরকে ভাবতে হবে। এই ম্যাচের ফলাফলের উপর নির্ভর করবে আইএসএল ফুটবলে লিগ টেবলে ইস্টবেঙ্গল কয়েক ধাপ এগিয়ে যেতে পারবে কিনা?
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে কোচের সঙ্গে হাজির ছিলেন গোলরক্ষক প্রভসুখন সিং। তিনি বলেন, দলের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন না। এটা অবশ্যই চিন্তার ব্যাপার। চোট-আঘাতে দলের অবস্থা খুবই খারাপ। পাশাপাশি, কার্ডেরও সমস্যা রয়েছে। তবুও বলতে চাই লড়াই থেকে আমরা কোনও সময়ের জন্যই পিছিয়ে থাকব না। ম্যাচে সেরা খেলাটা উপহার দিয়ে এগিয়ে থাকাই আমাদের পাখির চোখ।
Advertisement



