কর্ণাটক উপনির্বাচনের সাফল্যে স্বস্তিতে ইয়েদুরপ্পা শিবির

এই উপনির্বাচন কর্ণাটকে গেরুয়া শিবিরের সরকার ধরে রাখতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বিজেপির সামনে। সেক্ষেত্রে মসনদ টলমল করছিল ইয়েদুরপ্পার।

Written by SNS Bengaluru | December 10, 2019 12:30 pm

বি এস ইয়েদুরাপ্পা (File Photo: IANS)

গেরুয়া শিবিরের সামনে ছিল ৬টি বিধানসভা আসন দখলের মূল লড়াই। কারণ ইতিমধ্যেই কর্ণাটকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অঙ্কে ১০৫ জন বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে সরকার গঠন করে ফেলেছে ইয়েদুরাপ্পা শিবির। এর সঙ্গে সমর্থন রয়েছে ২ জন নির্দলীয়র। ম্যাজিক ফিগার ১১৩টি আসন পকেটে পুরে ফেলাই ছিল ২০১৯ ডিসেম্বরে কর্ণাটক উপনির্বাচনে বিজেপির কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আর এই ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে পদ্মশিবিরের দরকার ছিল আর মাত্র ৬টি আসন। তবে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে বিজেপির ইয়েদুরপ্পা শিবির এখন ঘােড়ার গতিতে দৌড়চ্ছে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক কর্ণাটকে বিজেপির ঝুলিতে কী কী এলাে।

সকাল থেকেই কর্ণাটকের উপনির্বাচনের ট্রেন্ড যা বলছে তাতে ২২৪টি আসনের কর্ণাটক বিধানসভা দখল করা এখন বিজেপি’র কাছে ‘বায়ে হাত কা খেল।

১৫টি আসনের উপনির্বাচনে প্রাথমিক গণনায় বিজেপি ১০টি আসন এগিয়ে রয়েছে। আপাতত ট্রেন্ডের যা গতি তাতে বিজেপির দখলে আসতে পারে ১২টি আসন। দুটি আসনে ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে।

১৫টি বিধানসভা আসনের এই উপনির্বাচনে ১০টি দখল করে ১২টি দখলের পথে বিজেপি। জেডিএস ও কংগ্রেসের জোট সরকারকে ফেলে কয়েকমাস আগেই কন্নড়ভূমের মসনদ দখল করে বিজেপির ইয়েদুরাপ্পা সরকার। আর তারপরেই এই নির্বাচন বিজেপির কাছে শক্তি পরীক্ষার একটি বড় দিক ছিল। সেখানে ইয়েল্লাপুর ও হিরেকপুরের মতাে জায়গায় বিজেপি নিজের জমি দখলে রেখে ফেলে দাক্ষিণাত্যে বিজয়রথ দাপটের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পদ্মশিবির।

চুড়ান্ত নাটকীয়তার পর কর্ণাটকে কয়েকমাস আগেই সরকার গড়েছিল ইয়েদুরপ্পা শিবির। সেই সময় ১৭জন বিধায়ক জেডিএস ও কংগ্রেসের জোট সরকারকে ফেলতে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তাঁদের অ্যান্টি ডিফেকশন আইনে বাতিল করা হয় সদস্যপদ। আর সেই ১৭ জন বিধায়কের আসনের মধ্যে ১৫টি আসনে গত ৫ ডিসেম্বর ভােট সম্পন্ন করা হয়েছে। যার ফলাফল আজ প্রকাশ্যে আসছে। প্রসঙ্গত, ১৭টি আসনের মধ্যে ২টি আসন নিয়ে সুপ্রিমকোর্টে চলছে আইনি লড়াই।

প্রসঙ্গত, এই উপনির্বাচন কর্ণাটকে গেরুয়া শিবিরের সরকার ধরে রাখতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বিজেপির সামনে। সেক্ষেত্রে মসনদ টলমল করছিল ইয়েদুরপ্পার। তবে ভােট ৬টি আসনের জায়গায় ১০টি আসন সকাল সকাল নিশ্চিত করে ফেলায় বিজেপি শিবিরে তথা ইয়েদুরপ্পা শিবিরে আপাতত স্বস্তির হাওয়া।

এদিকে, ইয়েড্ডি শিবিরকে দুরমুষ করতে সিদ্দারামাইয়া-কুমারস্বামীর কংগ্রেস ও জেডিএস জোটের প্রয়ােজন ছিল নুন্যতম ১২টি আসন। আর তা পেলেই ফের একবার কর্ণাটকে সরকার গড়ার সুযােগ পেয়ে যেত কংগ্রেস জোট। তবে সেগুড়ে বালি ছড়িয়ে দিয়েছে ইয়েদুরপ্পা শিবির। রিসর্ট-রাজনীতি ও ঘােড়া কেনাবেচার প্রভাব পড়েনি বিজেপির ভােট যুদ্ধে। একাধিকবার কর্ণাটকে বিজেপি সরকারে আসার পর থেকেই ঘােড়া কেনাবেচার অভিযােগ ছিল ইয়েদুরপ্পাদের বিরুদ্ধে।

বিরােধী শিবিরের দাবি ছিল, বিজেপি বিধায়ক কেনাবেচা করে ক্ষমতায় আসতে চাইছে। অন্যদিকে, কন্নড় রাজনীতি ঘিরে দেখা যায় রিসর্ট রাজনীতিও। রিসর্টে বিধায়কদের রেখে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের দিন তাদের আলাদা বাসেও নিয়ে যেতে দেখা যায় বেঙ্গালুরুতে। তবে এদিনের নির্বাচনের ফলাফল, বিজেপির বিরুদ্ধে ঘােড়া কেনাবেচার দুর্নীতির তকমা হঠানাের শ্রেষ্ঠ মঞ্চ হয়ে উঠল।

প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েও সরকার গড়তে পারেনি বিজেপি। সেখানে শিবসেনার সঙ্গে জোট গড়ে নির্বাচনে লড়ে খুব একটা ভালাে ফল পায়নি পদ্মশিবির। অন্যদিকে, ২০১৯ সালে হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনেও একই হাল হয় গেরুয়া শিবিরের। মনে করা হচ্ছিল, এই নেতিবাচক নির্বাচনী প্রভাব কর্ণাটকের নির্বাচনে পড়তে পারে। তবে সেই সমস্ত সম্ভাবনাকে দূরে সরিয়ে ইয়েদুরপ্পা শিবির কার্যত রাজনৈতিক মাটি কর্ণাটকে শক্ত করে ফেলল এই উপনির্বাচনে।