• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

অধ্যাপিকাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার কলেজের প্রধান করণিক

সরকারি আইনজীবী পবিত্র রানা জানান, অভিযুক্তকে দু’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

গোপীবল্লভপুর থানা। ছবি: ইন্টারনেট।

সম্প্রতি কলেজের মধ্যে এক অধ্যাপিকা ও করণিকের যৌন সংসর্গে লিপ্ত হওয়ার এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। সে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল কলেজ। আর এর মধ্যে ওই অধ্যাপিকার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেপ্তার করল ওই কলেজের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান করণিক সুজিত পানিকে।

ইতিমধ্যে গত ৩১ অক্টোবর অবসর নিয়েছেন প্রধান করণিক। প্রায় ২ মাসের মাথায় এবার প্রধান করণিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করলেন বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপিকা। এমন ঘটনায় শোরগোল পড়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরে। প্রশ্ন উঠেছে, এতদিন পর কি নিজের চাকরি বাঁচাতে ওই অধ্যাপিকা ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন? বুধবার বিকেলে গোপীবল্লভপুর থানায় অবসরপ্রাপ্ত প্রধান করণিক বছর ষাটের সুজিত পানির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন ওই অধ্যাপিকা। অভিযোগের ভিত্তিতে সুজিতকে রাতেই গোপীবল্লভপুরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতকে বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম এসিজেমএ আদালতে তোলা হয়। তদন্তের স্বার্থে ধৃতকে পাঁচদিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চায় পুলিশ।

Advertisement

সরকারি আইনজীবী পবিত্র রানা জানান, অভিযুক্তকে দু’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। গোপীবল্লবপুরের সুবর্ণরেখা কলেজের বাংলার বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে সুজিতের সম্পর্ক নিয়ে বহুদিনই গুঞ্জন ছিল এলাকায়। সূত্রের খবর, গত ৩০ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষকে ই-মেল করে জনৈক ব্যক্তি ভিডিয়োটি পাঠিয়ে অভিযোগ করেন কলেজের বাংলা বিভাগের অফিস ঘরে দরজা বন্ধ করে নিয়মিত দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হন প্রধান করণিক ও অধ্যাপিকা। দু’জনেই বিবাহিত। তারপরও কলেজের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে তাঁরা লিপ্ত হন। এমন অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি পরিচালন পরিষদের সভাপতি দুলাল মুর্মুকে জানান অধ্যক্ষ। এরপর কলেজের সভাপতি দুলাল মুর্মুর নির্দেশে ১ অক্টোবর গভর্নিং বডির জরুরি বৈঠক দু’জনকে শো-কজ করা হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের জবাব চাওয়া হয়। ওই দিনই পাঁচ সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করা হয়। জানা গিয়েছে, ৩ অক্টোবর দু’জনেই শো-কজের জবাব দেন। এরপর ৪ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ে।

Advertisement

সুবর্ণরেখার জল বহুদূর গড়ালেও প্রধান করণিক ও অধ্যাপিকা অক্টোবরের গোড়া থেকেই কলেজে গরহাজির থাকেন। ২৪ অক্টোবর ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে বাংলার বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপিকা ও প্রধান করণিককে সাসপেন্ড করা হয়। ৩১ অক্টোবর প্রধান করণিকের অবসরের দিন ছিল। এরপর নিয়মানুযায়ী পুরো বিষয়টির বিভাগীয় তদন্তের জন্য সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রতিনিধিও রয়েছেন। ২২ নভেম্বর গভর্নিং বডির বৈঠকে ওই কমিটিকে ষাট দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দিতে বলা হয়েছে। তার ভিত্তিতে গভর্নিং বডি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তারপরই অধ্যাপিকা পুলিশের কাছে প্রধান করণিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করলেন।

Advertisement