নারায়ণগঞ্জে হেফাজতে ইসলাম ও স্থানীয় মৌলবাদীদের আপত্তিতে বন্ধ হয়ে গেছে ‘মহতী সাধুসঙ্গ ও লালন মেলা’। গত শুক্র ও শনিবার দুদিনব্যাপী এই মেলা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় এই মেলা। গত প্রায় দশ বছর ধরে নিয়মিত এই মেলা হয়ে আসছিল।
এই মেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক কর্মীরা এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মেলায় অংশগ্রহণ করতে কুষ্টিয়া সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লালন ভক্তরা এসেছিলেন। কিন্তু মেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের ফিরে যেতে হয়েছে। সাংস্কৃতিক কর্মীরা এই বিষয়টিকে জেলা প্রশাসনের ব্যর্থতা বলে মনে করছেন। যদিও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক জানিয়েছেন, এই মেলাকে কেন্দ্র করে যেধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, মেলা বন্ধ না করলে সেই পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হয়ে যেত।
Advertisement
সূত্রের খবর, এই অনুষ্ঠানের সপ্তাহখানেক আগে গত ১৫ নভেম্বর হেফাজতে ইসলামের স্থানীয় কিছু নেতা-কর্মী এই মেলাকে ধর্ম বিদ্বেষী অনুষ্ঠান আখ্যা দিয়ে তা বন্ধের হুমকি দিয়ে ওই এলাকায় মিছিল করেছিল। তাঁরা জানিয়েছিলেন যে, তাঁদের আপত্তির পরেও যদি সেখানে মেলা হয়, তাহলে যেকোনও মূল্যে তাঁরা তা রুখবেন। পরে অবশ্য নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক কর্মীরা এর প্রতিবাদে পাল্টা কমর্সূচি পালন করেন। তাঁরা জেলাপ্রশাসককে এই মেলা যাতে বন্ধ না হয়, তা দেখতে বলেছিলেন। তাঁদের কথায় জেলা প্রশাসক একমত হয়েছিলেন। কিন্তু ওই এলাকায় মসজিদগুলি থেকেও যেভাবে বিরুদ্ধ প্রচার চালানো হয়, তারপরে পরিস্থিতি যাতে খারাপ পর্যায়ে না পৌঁছয়, তাই আইনশৃঙ্খলার অবনতি যাতে না ঘটে, সে কথা ভেবে মেলার আয়োজন বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন।
Advertisement
প্রসঙ্গত বাংলাদেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর নারায়ণগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাজারের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। গত ৬ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুর এলাকায় অবস্থিত দেওয়ানবাগ মাজারে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল। সাংস্কৃতিক সংগঠকরা অবশ্য এই ধরনের ঘটনাকে ভালো চোখে দেখছেন না। এবং এধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে তার ফলও খুব ভালো হবে বলে তাঁরা মনে করেন না।
Advertisement



