• facebook
  • twitter
Sunday, 22 June, 2025

আদমপুর বিমানঘাঁটিতে হামলা নিয়ে প্রকাশ্যে পাকিস্তানের মিথ্যাচার

ভারতের আদমপুর বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে একটি সুখোই সু–৩০ যুদ্ধবিমান ধ্বংস করার যে দাবি পাকিস্তান করেছিল তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

পহেলগামে পাক সন্ত্রাসবাদীদের হামলায় মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। তারপরই অপারেশনের সিঁদুরের মাধ্যমে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটিতে প্রত্যাঘাত করেছিল ভারত। এরপর পাকিস্তান দাবি করে তারা পঞ্জাবের আদমপুর বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ভারতের বেশকিছু যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। এই জাতীয় অস্বাভাবিক দাবি করতে দেখা গিয়েছে সে দেশের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমেও । তবে পাকিস্তানের সেই মিথ্যা দাবি উড়িয়ে দিলেন জিও–ইন্টেলিজেন্স বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়েন সাইমন।

সাইমন জানিয়েছেন, ভারতের আদমপুর বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে একটি সুখোই সু–৩০ যুদ্ধবিমান ধ্বংস করার যে দাবি পাকিস্তান করেছিল তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রমাণ হিসেবে এ বছরের মার্চ মাসের একটি স্যাটেলাইট ছবি তাঁর এক্স হ্যান্ডলে শেয়ার করে সাইমন লিখেছেন, সে সময় একটি মিগ–২৯ বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে আদমপুর বিমানঘাঁটিতে। ইঞ্জিন টেস্ট প্যাডের পাশে যে ধোঁয়া বা তাপ দেখা যাচ্ছে তা অত্যন্ত স্বাভাবিক।

অপারেশন সিঁদুরের কারণে পাকিস্তানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার পর থেকে পাকিস্তান ভারতের হামলাকে ছোটো করে দেখানোর জন্য এ রকম বিভ্রান্তিকর প্রচার চালাচ্ছিল। কিন্তু তাঁদের সেই সব দাবি মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। এর আগে পাকিস্তান দাবি করেছিল যে, চিনের তৈরি জেএফ–১৭ যুদ্ধবিমান থেকে তাঁদের ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলি আদমপুরে রাশিয়ার তৈরি এস–৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যা সুদর্শন চক্র নামেও পরিচিত ধ্বংস করেছে। কিন্তু ভারতের বিমানঘাঁটিতে পাকিস্তানের আঘাত হানার ক্ষেত্রে পাকিস্তানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল এই সুদর্শন চক্রই।

উল্লেখ্য, সংঘর্ষবিরতির তিন দিন পর ১৩ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আদমপুর বিমানঘাঁটিতে গিয়ে এস–৪০০ ধ্বংসের দাবিটি মিথ্যা বলে প্রমাণ করে দেন। সেখানে একটি মিগ–২৯ জেট এবং একটি অক্ষত এস–৪০০ বিমান স্পষ্টভাবে দেখা গিয়েছে। আদমপুর ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানঘাঁটি। সেখানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়ে বলেছিলেন যে, ভারত সন্ত্রাসীদের শিবির এবং তার সামরিক ঘাঁটিগুলিকে আক্রমণ বন্ধ করেছে। এর আগে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আদমপুর বিমানঘাঁটিতে একটি ক্ষতিগ্রস্ত এস–৪০০–র একটি স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে ঘোষণা করেছিল, ‘এস ৪০০ ক্ষতিগ্রস্ত!’ কিন্তু ছবিতে ধ্বংসের কোনও দৃশ্য বা চিহ্ন ছিল না। যেমন গর্ত, ধ্বংসাবশেষ বা কোনও ক্ষতিগ্রস্ত সরঞ্জাম দেখা যায়নি। ভারত পাকিস্তানের দাবি অস্বীকার করার পরেও বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে পাকিস্তান এই মিথ্যা খবর ছড়িয়েছিল।

১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের সময়ও আদমপুর ছিল পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু এই বিমানঘাঁটিতে পাকিস্তান ঢুকতেই পারেনি। এই বিমানঘাঁটিতে তখনও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধবিমান ছিল। ২০২২ সালে আদমপুর বিমানঘাঁটিতে প্রথম এস–৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছিল। এখন সেখানে মিগ–২৯ এবং এসইউ–৩০, এমকেআই সহ ভারতীয় বিমানবাহিনীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইটার স্কোয়াডন রয়েছে। আদমপুর বিমানঘাঁটি তার র‍্যাডার সিস্টেম সহ পঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীর এবং রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলিকে সুরক্ষিত রাখার ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেক্ষেত্রে আদমপুর বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংস করার কৃতিত্ব দেখাতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিল পাকিস্তান।