ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে হস্তক্ষেপ করবে না আমেরিকা। বৃহস্পতিবার এই কথা জানিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স। ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের মাথাব্যথার বিষয়ই নয়। আমেরিকা ভারতীয়দের তাদের অস্ত্র সংবরণের নির্দেশ দিতে পারে না। আমরা পাকিস্তানিদের তাদের অস্ত্র জমা দিতে বলতে পারি না। তাই আমরা কূটনৈতিক পথ অনুসরণ করব।’
কূটনীতিকদের একাংশ মনে করছেন, গাজা এবং ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর ক্ষেত্রে অতি সক্রিয়তায় কাজ না হওয়াতেই দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি নিতে চাইছে ওয়াশিংটন। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভান্সের কথায় সেই ইঙ্গিতই রয়েছে।
জেডি ভান্স বলেন, ‘আমরা যা করতে পারি, তা হল দু’পক্ষকে একটু ঠান্ডা মাথায় আলোচনায় আসার আহ্বান জানানো। কিন্তু আমরা কোনওভাবেই এমন এক যুদ্ধে ঢুকব না, যার সঙ্গে আমেরিকার সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই এবং যা আমেরিকা নিয়ন্ত্রণও করতে পারবে না।’
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডেপুটি মনে করেন, পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে সংঘাত আমেরিকার কাছে উদ্বেগের বিষয়। ওয়াশিংটন চায়, দু’দেশের মধ্যে তৈরি হওয়া উত্তেজনা প্রশমিত হোক। কিন্তু শেষমেশ যদি যুদ্ধ হয়, তার অংশ হবে না আমেরিকা। তবে সরাসরি অংশ না নিলেও আমেরিকা কূটনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালাবেন বলে জানান ভান্স।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে বিশেষ আলোচনায় বসেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিরও। পরে এক্স হ্যান্ডেলে বিদেশমন্ত্রী লেখেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধে পাশে থাকতে চায় আমেরিকা। এটা যথেষ্ট প্রশংসনীয়। সীমান্ত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সঠিক নিশানায় পরিমিতভাবে পদক্ষেপ করছে ভারত। যে কোনও হামলা হলে, আমরা তার কঠোর জবাব দেব।’
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যদি তিনি কোনওভাবে সাহায্য করতে পারেন, তাহলে তিনি সেই ভূমিকা নিতে প্রস্তুত। ট্রাম্পের কথায়, ‘এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমি উভয় পক্ষকেই খুব ভালভাবে চিনি। আমি চাই তারা নিজেরাই সমাধানে পৌঁছাক।’
প্রসঙ্গত, ৭ মে ভোর রাত থেকে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিতে অভিযান চালিয়েছিল ভারত। এরপর বৃহস্পতিবার পাকিস্তান ভারতীয় সামরিক ও বেসামরিক এলাকায় একযোগে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও তীব্র গোলাবর্ষণের মাধ্যমে আক্রমণ চালায়।