পাকিস্তানের পর এবার ইজরায়েল। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য ট্রাম্পকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এর আগে ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতির জন্য ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া উচিত বলে জানিয়েছিল পাকিস্তান। নোবেল কমিটিকে সেই প্রস্তাবও জানিয়েছিল তারা।
সোমবার রাতে হোয়াইট হাউসে নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন ট্রাম্প এবং নেতানিয়াহু। সেই বৈঠকে নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন, তিনি নোবেল কমিটির কাছে চিঠি পাঠিয়ে ট্রাম্পকে শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছেন। নেতানিয়াহু বলেন, ‘ট্রাম্প একের পর এক দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করছেন। এটা তাঁর প্রাপ্য।’ একথা বলেই তিনি একটি চিঠি তুলে ধরেন ট্রাম্পের সামনে, যেটি নোবেল কমিটিতে পাঠানো মনোনয়নপত্র বলে জানান তিনি। মনোনয়নের খবর শুনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এটা জানতাম না। বিশেষ করে আপনার (নেতানিয়াহুর) কাছ থেকে এটা আসা সত্যিই সম্মানের।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমি যুদ্ধ থামাতে চাই। আমি মানুষকে মরতে দেখতে পছন্দ করি না।”
সম্প্রতি ইজরায়েল-ইরান ও গাজা ভূখণ্ডে হামাসের সঙ্গে ইজরায়েলের সংঘাতে মধ্যস্থতার ভূমিকায় দেখা গিয়েছে আমেরিকাকে। ইরানের পরমাণু কেন্দ্রগুলিতে মার্কিন হামলার পর সংঘর্ষ চরমে পৌঁছালেও, পরিস্থিতি শান্ত করতে সক্রিয় হয় হোয়াইট হাউস। একইভাবে হামাস ও ইজরায়েলের সংঘর্ষেও শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয় আমেরিকা। এই কূটনৈতিক বিষয়গুলিকে সামনে রেখেই নেতানিয়াহুর এই মনোনয়ন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নোবেল মনোনয়ন ঘিরে আগ্রহ বাড়ছে দক্ষিণ এশিয়াতেও। এর আগে পাকিস্তান সরকারও ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব দিয়েছিল। ইসলামাবাদ দাবি করেছিল, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন ট্রাম্প। তবে ভারতের দিক থেকে সেই দাবি খণ্ডন করা হয়। ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রি জানান, সাম্প্রতিক সংঘর্ষবিরতি ছিল পাকিস্তানের প্রস্তাব, যা ভারত গ্রহণ করেছে, কারও মধ্যস্থতার ফল নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে একই বার্তা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
অবশ্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নিজেই বিভিন্ন সময় দাবি করে এসেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মতো পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা তিনি প্রশমিত করেছেন। তাঁর সেই বক্তব্যকে প্রথম থেকেই সমর্থন করেছিল পাকিস্তান। সেই কারণেই ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া উচিত বলে জানিয়েছিল ইসলামাবাদ। নোবেল কমিটিকে সেই প্রস্তাবও জানিয়েছিল তারা। এবার সেই তালিকায় যোগ দিল ইজরায়েলও।
বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক শান্তি প্রয়াস, দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনৈতিক সক্রিয়তা এবং আমেরিকার সামরিক হস্তক্ষেপ নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশলের জন্য ট্রাম্পের এই মনোনয়ন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তবে নোবেল শান্তি পুরস্কার আদৌ তাঁর ঝুলিতে যাবে কি না, তা সময়ই বলবে।